গত ১৪ জুন, সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মাসিক পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসী কনফারেন্স থেকে অবগত হওয়া যায় যে, ২০১৫ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ সর্বসাকুল্যে ১১ হাজারেরও বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বৈচারিক কার্যক্রমের এই সফলতাকে সভায় উপস্থিত আলোচকবৃন্দ সুনামগঞ্জের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মামলা নিষ্পত্তির রেকর্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
দেশের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় যেখানে বলা যায়, বৈচারিক কার্যক্রমে বিশেষ করে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে, বিভিন্ন জটিলতা বিদ্যমান এবং তৎকারণে বাংলাভাষায় মামলাজট বলে একটি নতুন শব্দই সৃষ্টি হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে শত-সহ¯্র প্রতিবন্ধকতা ও জটিলতাকে জয় করে অর্থাৎ এইরূপ শ্লথতাকে কাটিয়ে উঠে গতিসঞ্চার চাট্টিখানি কথা নয়। সুনামগঞ্জের আদালতে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে শ্লথতাকে পর্যুদস্ত করা সম্ভব হয়েছে। আলোচকবৃন্দ সার্বিক ও অগ্রগতিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। আমরাও জানাই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ “চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রহিবুল ইসলাম সুনামগঞ্জে যোগদানের পর তাঁর গৃহীত কিছু পদক্ষেপের ফলে গত ১১ মাসে অর্থাৎ ২০১৫ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত সময়ে সর্বমোট ১১ হাজার ২৫৫টি মামলা নিষ্পত্তি হয়।” আমরা তাঁকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন।
মামলা নিষ্পত্তির জন্য বেশ কতগুলো কার্যক্রম পর্যায়ক্রমিকভাবে অব্যাহতগতিতে সম্ভব করে তোলা চাই। যেমন পরোয়ানা জারি, কার্যকরণে সৃষ্ট সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও দূরীকরণ, আদালতে সাক্ষীর হাজিরা নিশ্চিতকরণ, তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত প্রেরণ, মেডিকেল সার্টিফিকেট দ্রুত প্রেরণ, আসামির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সংশ্লিষ্ট মামলার আইনজীবীদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণে কার্যকর ভূমিকা ইত্যাদি। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিকরণের লক্ষ্যে এইসব কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকেই সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে, কিছু কিছু মামলা এমন আছে যে, বছরের পর বছর কেবল তারিখ নির্ধারিত হয়, কিন্তু বাস্তবে মামলা নিষ্পত্তির কোনও অগ্রগতি হয় না। এমন মামলাগুলোকে আইনি পদ্ধতিতে দ্রুত নিষ্পত্তির উপায় উদ্ভাবন করা যায় কি-না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেটাও বিবেচনা রাখা উচিত। প্রয়োজনে, ক্ষেত্র বিশেষে, মামলার অপ্রয়োজনীয় তারিখ নির্ধারণ থেকে বিরত থাকার উপায় অবলম্বন সমীচীন হবে কি না ভাবতে হবে।