গণমাধ্যমান্তরে প্রকাশ- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী সিজারিয়ান অপরেশনের সংখ্যা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। তিন গত বৃহস্পতিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা কনভেনশন হলে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৪ উদযান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এই বক্তব্য দেশের মানুষের কাছে একটি আশার বার্তা প্রচার করছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটা কতোটা বাস্তবায়িত হবে বলা মুুশকিল।
বিষয়টা নিয়ে অনেক কীছু বলার আছে। চিকিৎসাশাস্ত্রানুসারে সিজার অর্থাৎ প্রসূতির পেট কেটে বাচ্চা বের করার কৌশলটি একটি প্রকৃতিরোধী মানবিক ক্রিয়া। কিন্তু প্রসূতি ও শিশুর জীবনের নিরাপত্তা বিধানে প্রসূতির পেট কেটে বাচ্চা বের করার পদ্ধতি অবশ্যই বিশ্বব্যাপী একটি মানবকল্যাণকর চিকিৎসাসেবা বলে স্বীকৃত। কিন্তু এই সেবাটি নির্বিচারে প্রয়োগ করা যায় না। চিকিৎসাশাস্ত্রের নিয়ম অনুসারে এটা কেবল প্রয়োজনে কার্যকর করার নীতিকে মান্য করা হয়, কোনও না কোনও অনিবার্য কারণের প্রেক্ষিতে। সে-কারণটা কী? যখন প্রসূতি বা গর্ভস্থিত বাচ্চার কোনও অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হয়ে উঠে না অর্থাৎ স্বাভাবিক প্রাকৃতিক উপায়ে প্রসূতি বাচ্চা প্রসব করতে অসক্ষম হয়ে পড়েন কেবল তখন চিকিৎসাশাস্ত্র মায়ের পেটে ছুরি চালিয়ে তা চিরে ফাঁক তৈরি করে সে-ফাঁক দিয়ে বাচ্চা বের করে আনার পদ্ধতিকে সমর্থন করে, অন্যথায় নয়। বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনও দেশে নির্বিচারে প্রসূতির পেট চিরে বাচ্চা বের করে আনার পদ্ধতি বলবৎ আছে কি না জানা নেই, তবে বাংলাদেশে যে আছে তার প্রমাণ তো স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মহোদয়ের বক্তব্য থেকেই হৃদয়ঙ্গম হয়। অভিজ্ঞমহলের অভিমত এই যে, অকারণে ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কেবল কয়টি টাকা উপার্জনের জন্যে প্রসূতির পেট কেটে বাচ্চা বের করার পদ্ধতিটি আইন করে নির্মূল করা হোক। ভুলে গেলে চলবে না এটি একটি অবৈধ ও অন্যায় পদ্ধতি।