স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। ১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সংসদ সদস্যদের সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়। এরশাদ সরকার বিদায় নেওয়ার সঙ্গে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়োগ বাতিল হয়ে যায়। তারপর থেকে জেলা পরিষদ কার্যত চলছে জেলা প্রশাসকদের নিয়ন্ত্রণে। ২০০৯ সালে তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে জেলা পর্যায়ের সরকারি দলের নেতাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।
স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী করার জন্য জেলা পরিষদের নির্বাচন করা হচ্ছে এমন কথাই বলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী। জেলা পরিষদের নির্বাচন গণতন্ত্রায়নের পথে একটি ভালো পদক্ষেপ। গণতন্ত্র ও সরকারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা গড়ে তুলতে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। অগ্রসর গণতান্ত্রিক দেশগুলোয় স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে দিন দিন শক্তিশালী করা হচ্ছে জনগণের কাছে সরকারব্যবস্থাকে অর্থবহ করে তোলার জন্য।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের মূল লক্ষ্য হলো সাংবিধানিক আকাক্সক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। কেন্দ্রে যেমন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সরকার গঠন করবে, ঠিক তেমনিভাবে জেলায় নির্বাচিত জেলা পরিষদ, উপজেলায় নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়নে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচিত সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভায় নির্বাচিত পৌরসভার প্রতিনিধিরা শাসনকার্য পরিচালনা করবেন এটাই সাংবিধানিক আকাক্সক্ষা।
স্বাধীনতার পর দেশে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে, এটি স্বস্তিদায়ক। জেলা পরিষদ গঠিত হলে তা হবে একটি বড় আকারের স্থানীয় সরকার। এর মাধ্যমে জেলা পর্যায়ে জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্ব তৈরি হবে। এতে দেশের স্থানীয় সরকারের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। আমরা চাই সুষ্ঠু জেলা পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা গড়ে উঠুক। শক্তিশালী স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাংলাদেশ দ্রুত একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।