1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল : প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য আশীর্বাদ

  • আপডেট সময় সোমবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৬

আজকের শিশুরাই আগামীর ভবিষ্যৎ। আজকে যারা শিশু ভবিষ্যতের দায়িত্ব একদিন তারাই নেবে। কিন্তু শিশুদের মধ্যে যারা অটিস্টিক শিশু বা প্রতিবন্ধী আছে, তারা যে পারবে না এ ধারণা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। একটা সময় ছিল যখন সমাজে অটিস্টিক শিশুদের মনে করা হতো তারা বোঝা। কিন্তু সময় বদলেছে। প্রতিবন্ধীরা এখন আর সমাজের বোঝা নয়, তারা সম্পদ। তাদের মেধা কাজে লাগাতে শুধুমাত্র দরকার আন্তরিক সহযোগিতা।
সারাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো সুনামগঞ্জে অটিস্টিক শিশু রয়েছে। সম্প্রতি তাদের জন্য চালু করা হয়েছে অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এই স্কুলটি যে আশীর্বাদস্বরূপ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল সম্পর্কে গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদন পাঠে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পরিচালনায় স্কুলটি চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার দুটি কক্ষে আপাতত চালু রয়েছে স্কুলটির কার্যক্রম। যেখানে প্রতিদিন পাঠ নিচ্ছে ৫৭ জন শিক্ষার্থী। এ স্কুলটিতে বর্তমানে মা ও শিশু, শিশু ও বিশেষ শ্রেণিসহ রয়েছে ৪টি শ্রেণি। এরমধ্যে ০ থেকে ৬ বছর, ৬ থেকে ১১ বছর এবং ১১ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুরা আলাদা আলাদা শ্রেণিতে পাঠগ্রহণ করছে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পরিচালিত শিখন কার্যক্রমে পাঠ দিচ্ছেন ১১ জন প্রশিক্ষিত শিক্ষক। সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল অনেকটাই বদলে দিয়েছে এ স্কুলের শিক্ষার্থীদের। আগেকার অভ্যাস বদলসহ আচার ব্যবহারের দিক থেকে এখন তারা অনেকটাই মিশুক। পাল্টেছে তাদের মন খারাপের দিন। পৃথিবীটাকে যেন তারা এখন নতুন করে সাজিয়ে নেয়ার ধারণা রাখে। গানের ছন্দে চেনা হয়েছে নিজের হাত, চোখ, মাথা, মুখসহ অনেক কিছুই। আগের মতো আর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেনা ওরা। স্কুলে এসে হাসতে শিখেছে এসব কচিকাঁচারা। শিখেছে অঙ্গভঙ্গি আর বলার ধরণ। গল্পে গল্পে আর খেলার ছলে শিখছে লেখাপড়াও। ক্রমান্বয়ে শিশুদের এমন উন্নতি দেখে অভিভাবকরাও আশায় বুক বেঁধেছেন।
অবস্থা বিবেচনায় বুঝা যায়, স্কুলটিতে শিক্ষাদানের আন্তরিক পরিবেশের অভাব নেই। শিশুরা শিখছে আনন্দভরে। যা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। এমন খবরে আমরা তৃপ্ত হই।
অটিস্টিক শিশুরা বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অত্যন্ত পারদর্শী হয়। তাই এই ধরনের শিশুদের বিশেষ প্রয়োজন স¤পন্ন শিশু বা বুদ্ধিবৃত্তিক চাহিদা স¤পন্ন শিশু বলা হয়। তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যথাযথভাবে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে তারা প্রায় স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবে। এক্ষেত্রে অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে আমরা মনে করি।
জানাগেছে, অটিস্টিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্কুলের জন্য পুরাতন জেলের সম্মুখস্থ জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, যথাস্থানেই প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য শীঘ্রই নির্মাণ করা হোক স্কুল ভবন। যেখানে থাকবে নিষ্পাপ শিশুদের জন্য নির্মল পরিবেশ, পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, শিশুরা বেড়ে উঠবে আপন আনন্দে। এক্ষেত্রে শুধু প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুন্দর হোক অটিস্টিক শিশুদের জীবন – এটাই কামনা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com