গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি শিরোনাম ছিলÑ “শহরের হোটেলগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ”। এই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে পুলিশ প্রশাসন অর্থাৎ সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার পক্ষ থেকে। তাছাড়া হোটেল ও রেস্টহাউসগুলোতে পুলিশি নজরদারি, তদারকি, তৎপরতা আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। হোটেলে আগত লোকজনের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, পরিপূর্ণ পরিচয়সহ আগমনের কারণ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াদি রেজিস্ট্রার বহিতে সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, এই নির্দেশনা সুনামগঞ্জের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে আরও বেশি স্বচ্ছতা দেবে, বেশি করে জনকল্যাণমুখী করে তোলবে ও সমগ্র সমাজে প্রশান্তির সুবাতাস বইয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সে জন্য সুনামগঞ্জ পুলিশ প্রশাসনকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন।
কোনও শহরের আবাসিক হোটেলগুলোকে কেন্দ্র করে অপরাধীচক্র তৎপর থাকতেই পারে। বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনীতিক পরিস্থিতিতে এটাই স্বাভাবিক। এমতাবস্থায় অসামাজিক ও বেআইনি কর্মপরিচালিত হবার বা হতেই পারে এমন সম্ভাবনাকে অস্বীকার করার কোনও যুক্তি থাকতে পারে না। বরং আড়ালে-অন্তরালে প্রকৃত অবস্থায় হয় তো ক্ষেত্র বিশেষে আরও ভয়াবহ মাত্রায় অবনতিশীল। যেটা সমাজের মধ্যে সামাজবিরোধিতার একরকম চর্চা, চূড়ান্ত অর্থে যে কোনও নীতিনৈতিকতার বিরোধী এবং ক্ষেত্র বিশেষে দেশদ্রোহীতাও বটে। এই তো জেলা সদরে কিছু দিন আগে একটি আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষে স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল, যদিও পরে সে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে।
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবাসিক হোটেল, রেস্টহাউসগুলোতে উপরোক্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে কার্যকর হলে হোটেলভিত্তিক বিভিন্ন অপরাধ, যেগুলো প্রশাসনসহ সাধারণের অজান্তে সংঘটিত হয়ে চলে, সংঘটনের হার একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে না আসুক, অন্তত কমবে যে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এমনটাই অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। প্রশাসনিক প্রচেষ্টায় সমাজে এই এমন ইতিবাচক পরিবর্তনের শুভ সূচনা ঘটুক এটাই আমাদের কাম্য। সে জন্য প্রশাসনকে আরও সচেতন, সতর্ক ও কার্যকরী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। এই প্রক্রিয়ার আপাতত কোনও বিকল্প চোখে পড়ছে না। আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি।