গণমাধ্যমে প্রকাশ, ‘দিরাই উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ বৃদ্ধির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সুনামগঞ্জ সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য জেবেল মিয়া। মামলায় অন্য বিবাদিরা হলেন- দিরাই উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী এটিএম মোনায়েম হোসেন, বাঁধের কাজের ২৭নং প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি মো. জগলু মিয়া ও ২৮নং পিআইসির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।’ আদালতের কাছে যেহেতু বিচার চাওয়া হয়েছে, সেজন্য ঘটনার সত্য-মিথ্যা নির্ধারণ করা এখন আদালতের এখতিয়ারে।
হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নিয়ে অতীতের বিভিন্ন ঘটনা ও বর্তমানের বাস্তবতার প্রেক্ষিত বিবেচনায় আমরা কেবল জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনা করে এই সম্ভাবনার কথা প্রকাশ করতে পারি যে, হাওররক্ষা বাঁধ নিয়ে দুর্নীতির অবকাশ রয়ে গেছে। কারণ সাধারণ মানুষের ধারণা দেশের আর্থনীতিক কর্মকা-ের সর্বত্রই কমবেশি দুর্নীতি হয়ে থাকে এবং হাওরাঞ্চলে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজেও হয়ে থাকে, তার অনেক অনেক দৃষ্টান্ত আছে। গণমাধ্যমে তার বিবরণও কম প্রকাশিত হয়নি, ভুরিভুরি সংবাদপ্রতিবেদন ও প্রবন্ধাকার লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
সেইসব লেখনাদির প্রেক্ষিতে আমরা মনে করি হাওরাঞ্চলে কাঠামোগত সহিংসতা পুরোপুরি কার্যকর আছে। যেহেতু হাওরাঞ্চলে ফসলডুবির জন্য অকাল বন্যার চেয়ে হাওররক্ষাবাঁধ নির্মাণের প্রকল্পে মানুষের করা দুর্নীতির দায় বেশি। যে-দুর্নীতি উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেশের সকল পর্যায় ও স্তরে চক্রের (সিন্ডিকেটের) আকারে বিস্তৃত এবং আকারে প্রকারে যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করছে, তাতে সেটাকে কাঠামোগত সহিংসতা ভিন্ন অন্য কোনও নাম দেওয়া যায় না। হাওরাঞ্চলে দুর্নীতিবাজ এই চক্রের বিরুদ্ধে হাওর বাঁচাও আন্দোলন ২০১৭ সনের পর থেকে সক্রিয় আছে। অভিজ্ঞমহলের ধারণা দুই-একটি মামলা-মোকদ্দমা করে এই কাঠামোগত সহিংসতাকে ঠেকানো যাবে না, যদি না সমাজের সর্বস্তরে ব্যক্তি স্বার্থে উজ্জীবিত হয়ে সম্পদ আহরণের অন্যায় ও অবৈধ উপায় অবলম্বনের পথকে রুদ্ধ করা যায়।