অনন্য জলাভূমি ও জীববৈচিত্র্যের আধার টাঙ্গুয়ার হাওর শুধু সুনামগঞ্জ নয় দেশের সম্পদ। এই সম্পদকে কাজে লাগানো গেলে একদিকে এই অঞ্চল যেমন লাভবান হবে অপরদিকে সরকারও আয় করবে বিপুল রাজস্ব। হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা হলে স্থানীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। অর্থনীতির বিশাল এই সম্ভাবনা খাতের উন্নয়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেন কালক্ষেপণ করছে বিষয়টি আমাদের বোধগম্য নয়।
গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠে পর্যটন বিষয়ে দু’টি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। একটি হলো “অবহেলায় জেলার প্রস্তাবিত পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা”, অপরটি “টাঙ্গুয়ায় বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা”। প্রকাশিত সংবাদ পাঠে জানা যায়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ২০১৩ সালের ৯জুলাই প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ওই এলাকার ৫০একর ভূমিকে পর্যটনের জন্য সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে পর্যটন অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। পর্যটন এলাকা হিসেবে সরকারি গেজেটভুক্ত হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন বছর পরও অবকাঠামো নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
প্রতিবছর শীতকালে টাঙ্গুয়ার হাওরে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় দুইশ প্রজাতির অতিথি পাখির আগমন ঘটে। স্থানীদের কাছে ‘নয় কুড়ি বিল আর ছয় কুড়ি কান্দা’ হিসেবে পরিচিত এই হাওরে নানা প্রজাতির পাখি, মাছ, উভচর প্রাণী, সরীসৃপ, গিরগিটি ও বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদসহ রয়েছে চোখজুড়ানো হিজল-করচের বাগ।
সাম্প্রতিককালে সুরমা নদীর উপর সেতু নির্মাণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কিছুটা উন্নয়ন হওয়ার সুবাদে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে হাওরটি। প্রতিনিয়ত পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়াসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে টাঙ্গুয়ায় পর্যটকদের আগমন আরও বৃদ্ধি পাবে।
আমরা মনে করি, কালক্ষেপণ না করে টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটন অবকাঠামো নির্মাণ করে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হোক। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।