1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:২০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

“ধর্মপাশা-মধ্যনগরে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে” ক্ষোভ-হতাশায় কৃষক

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০২৪

নির্মল চন্দ্র সরকার ::
বাঁধের যাবতীয় কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলার ৯টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ১২৮টি প্রকল্পের শতভাগ কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় হাওরের একমাত্র বোরো ফসলরক্ষা নিয়ে কৃষকেরা শঙ্কায় রয়েছেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। সময়মতো বাঁধের কাজ বাবদ অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া, হাওর থেকে দেরিতে পানি নামায় ও বৃষ্টিতে বাঁধের কাজ বন্ধ থাকাসহ নানাবিধ কারণে বাঁধের কাজ যথাসময়ে শেষ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাঁধের কাজে নিয়োজিত পিআইসিরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের দাবি, এই দুটি উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্পের গড়ে ৯০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে বাস্তবে এখন পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাওরপাড়ের কৃষকেরা।
ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর এই দুইটি উপজেলার ৯টি হাওর সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে রয়েছে। হাওরগুলো হচ্ছে, চন্দ্রসোনার থাল, জয়ধনা, সোনামড়ল, গুরমা, গুরমার বর্ধিতাংশ, কাইলানী, ঘোড়াডোবা, ধানকুনিয়া ও রুই বিল।
ধর্মপাশা উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৯৬টি প্রকল্প কাজের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ২১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এই উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধের ৯৬টি প্রকল্প কাজের মধ্যে ৪০টি প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর ৫৫টি প্রকল্প কাজে ঘাস লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া এখানকার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ৫২নং প্রকল্পে মাটি ভরাট কাজ এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। মধ্যনগর উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৩২টি প্রকল্প কাজের বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬কোটি ৪৯লাখ ৭৩হাজার টাকা। এই উপজেলায় ৩২টি প্রকল্প কাজের মধ্যে পাঁচটি প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর ২৪টি প্রকল্পে ঘাস লাগানোর কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া এখানকার ঘোড়াডোবা হাওরে ২টি ও গুরমা হাওরে ১টি প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ এখনো শেষ হয়নি। নীতিমালা অনুয়ায়ী, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাঁধের কাজ শুরু করে তা চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা ছিল।
ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের ৩৯নং পিআইসির সভাপতি সালাহ উদ্দিন বলেন, বাঁধের কাজ বেশ আগেই আমরা শেষ করেছি। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্য বাঁধের কাজের বরাদ্দকৃত অর্থ তিনটি কিস্তিতে আমরা পাওয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত দুটি কিস্তির টাকা পেয়েছি। ধারদেনা করে বাঁধের শতভাগ কাজ শেষ করেছি। দ্রুত তৃতীয় কিস্তির টাকা দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
চন্দ্র সোনার থাল হাওরের ৫২নং পিআইসির সদস্য সচিব শাহীন আলম বলেন, বৃষ্টি হওযার কারণে ছয়দিন আমাদের কাজটি বন্ধ ছিল। এ ছাড়া বাঁধের স্থানে গর্ত থাকায় যথাসময়ে কাজটি শুরু ও শেষ করা যায়নি। আগামী চারদিনের মধ্যে বাঁধটির যাবতীয় কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।
মধ্যনগর উপজেলার গুরমা হাওরের ২৪নং পিআইসির সভাপতি পিন্টু লাল তালুকদার বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি, কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে কাজ বন্ধ থাকা, বাঁধের কাজের স্থানে গর্ত থাকায় এবং বাঁধের স্থান পরিবর্তন করাসহ প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ সময়মতো না পাওয়ায় এই কাজটি পিছিয়েছে। আগামী ৫/৬দিনের মধ্যে বাঁধটির যাবতীয় কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধর্মপাশা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম ও মধ্যনগর উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী নুর আলম বলেন, ভারী বৃষ্টির কারণে বাঁধের কাজ পাঁচদিন বন্ধ ছিল। তাঁদের দাবি, এই দুই উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প কাজের গড়ে ৯০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাগঞ্জ পাবলিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম ও চামরদানী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দেবল পোদ্দার বলেন, যথাসময় বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকেরা হাওরের বোরো ফসলরক্ষা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন। কয়েকদিন টানা ভারী বৃষ্টিপাত হলে আগাম বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই কৃষকদের কষ্টার্জিত বোরো ফসলের যাতে কোনোরকম ক্ষতি না হয় সেজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে ফসলরক্ষা বাঁধের যাবতীয় কাজ শেষ করতে হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকদিন বাঁধের কাজ বন্ধ থাকায় নির্ধারিত সময়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। কাজের মেয়াদ এক সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। বাঁধের কাজ বাবদ বরাদ্দের তৃতীয় কিস্তির টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে পিআইসিরা পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com