সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
অর্থের অভাবে মানবেতর দিন কাটছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে এরিক এরশাদের। তার অভিযোগ, বাবার করে যাওয়া ট্রাস্ট থেকে কোনো টাকা পাচ্ছেন না তিনি।
গত মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকায় অবস্থিত পৈতৃক বাসভবন পল্লী নিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন এরিক। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ঢাকার বাসার কেয়ারটেকার শাহজাদা মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে এরিক বলেন, মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে বাবা এরশাদের কবর জিয়ারত করার জন্য রংপুরে আসি। জিয়ারতের পর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত পল্লীবন্ধু এরশাদ কোল্ড স্টোরেজে যাই মাকে সঙ্গে নিয়ে। সেখানে গেলে বারী মুন্সি, মুকুল ও তার ছেলে মান্নু আমাকে ও আমার মাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমাদের কোল্ড স্টোরেজে ঢুকতে দেননি। এমনকি আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই কোল্ড স্টোরেজের মালিক আমি, আমাকে ঢুকতে দেবে না, দেখে নেবে! দুই বছর ধরে কোল্ড স্টোরেজে যে আয় হচ্ছে, সেখান থেকে আমাকে এক পয়সাও দেওয়া হচ্ছে না। সব টাকা তারা লুটেপুটে খাচ্ছে।
তিনি বলেন, তাদের বোঝা উচিত, আমি এতিম ছেলে, আমার বাবা নেই। তারা আমার মাকেও গালি দিয়েছে, তারা অশোভন আচরণ করেছে। বিষয়টি আমরা পুলিশকে বলেছি, তারা পূর্ণ সহায়তা করেছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এরিক এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এরিক জাতীয় পার্টির রাজনীতি জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের পাল্টাপাল্টি দল করার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
এরিকের সংবাদ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিদিশা এরশাদ। তিনি বলেন, প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ একমাত্র সন্তান এরিকের কল্যাণের জন্য তিনি জীবিত থাকা কালে একটি ট্রাস্ট করে যান। যার নাম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্ট। রংপুরে পল্লী নিবাস বাস ভবন, নগরীর মাহিগঞ্জে একটি কোল্ড স্টোরেজসহ ঢাকায় কিছু সহায়স¤পদ আছে। এরশাদ যে ট্রাস্টের কমিটি করে গেছেন। তার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা এখনও দায়িত্ব হস্তান্তর করছেন না। ফলে আয়-উপার্জন না থাকায় এরিক প্রচ- রকম কষ্টের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বারবার বলার পরেও ট্রাস্টের দায়িত্ব এরিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় এরিকের নামে যে কোল্ড স্টোরেজ আছে সেখান থেকে যে আয় হচ্ছে তা তাকে দেওয়া হচ্ছে না। মুকুল এরশাদের দুঃস¤পর্কের চাচা। তিনি কোল্ড স্টোরেজ দেখাশোনা করতেন। বারবার ফোন করলেও ফোন ধরেন না। চিঠি দিলে উত্তর দেন না। বাধ্য হয়ে সেখানে গেলে আমাকে ও আমার ছেলেকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করা হয়। আমাদের চলে যেতে হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় থানা পুলিশ আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে। আমরা ঢাকায় গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এরিকের চাচা জিএম কাদের দলের চেয়ারম্যান। তাকে পুরো বিষয় জানানো হবে। তিনি কী করেন দেখি। বিদিশা বলেন, আমি হতবাক হয়েছি, আমার ছেলে এরিক একাই সাংবাদিক সম্মেলন করেছে। বক্তব্য দিয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। আমি দূরে দাঁড়িয়েছিলাম। চাইছিলাম, ওর সমস্যা ওকেই ফেস করাতে। সে করেছে। এজন্য আমি গর্বিত।
জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের পাল্টাপাল্টি দল করার ব্যাপারে তিনি বলেন, রাজনৈতিক ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।