1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৪:১৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সীমান্তে বেড়েছে চোরাচালান

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মোসাইদ রাহাত ::
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জে ৪৫ হাজার ৪৮০ কেজি (৪৫ টন) ভারতীয় পেঁয়াজসহ আটজনকে আটক করে পুলিশ। এটি সুনামগঞ্জের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চোরাচালান বলে সংশ্লিষ্টরা আখ্যায়িত করলেও সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়েনি চোরাচালান প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এছাড়া মাসখানেক আগে তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহরণের এক মাস পর ঢাকার উত্তরা আইইউবিএটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে উদ্ধার করে র‌্যাব। এসব ঘটনার পর থেকেই আলোচনায় আসছে হাওর সীমান্তের অপরাধপ্রবণতার কথা।
মাদক, ভারতীয় পেঁয়াজ, ভারতীয় শাড়ি, প্রসাধনী পণ্য, ভারতের চিনির বড় বড় চালান এবং ভারতীয় গরু পাচারে ব্যবহার হচ্ছে সুনামগঞ্জের জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকা বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো। এসব কর্মকা-ে সীমান্তবর্তী এলাকার দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালী মহল জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন সীমান্ত এলাকার মানুষ। তাঁরা বলছেন, হাওরের সীমান্তগুলোয় দিন দিন বেড়েই চলেছে চোরাচালন।
সরেজমিনে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো ঘুরে জানাযায়, সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলা সরাসরি সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলগুলো দিয়ে ভারতীয় অবৈধ পণ্য পাচার হয়ে ঢুকছে সুনামগঞ্জে। পরে এসব পণ্য সড়ক ও নৌপথে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। দেশে চিনি ও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই সুনামগঞ্জের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ঢুকছে চিনি ও পেঁয়াজের চালান। সেই সঙ্গে বেড়েছে ভারতীয় মদ, নিষিদ্ধ বিড়ি এবং গরু পাচার।
বাগলী সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা লুৎফুর আলী বলেন, আমাদের এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই অবৈধ চালান আসে। কয়েক দিন আগে শুনলাম ইকানো এক ছাত্ররে রাখিয়া নির্যাতন করছে। আমরা সাধারণ মানুষ কৃষিকাজ করিয়া খাই। বিভিন্ন রকমের ইন্ডিয়ান মদের বোতল থাকি শুরু করি ইন্ডিয়ান শাড়ি-চিনি সবই আয় এই এলাকা দিয়া। এখানে স্থানীয় কয়েকজন শক্তিশালী লোক নিয়ন্ত্রণ করে তাঁরা ওপরের মানুষরে (সীমান্তের নিরাপত্তা বাহিনীকে) টাকা দিয়া ওই সব কাজ করায়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহিরপুর উপজেলা বাদাঘাট এলাকার বাসিন্দা বলেন, সীমান্তগুলোতে ভারত থেকে অবৈধভাবে পণ্য আসা বেড়েছে। এ চক্রর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তি মদদ দিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদ করেও লাভ নেই।
এদিকে ভারতীয় চিনি ও পেঁয়াজ চোরাচালানের জন্য বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধনপুর, চিকারকান্দি, বাঘবেড়, চেংবিল, শরীফগঞ্জ, মথুরকান্দি, লাউড়েরগড় সীমান্ত এলাকা। পণ্য আনা সহজ হওয়ায় এই রুটগুলো বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। তাছাড়া সড়কপথে সরাসরি শহরের আব্দুজ জহুর সেতু দিয়ে অবৈধ পণ্যগুলো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেয়া সহজ হচ্ছে ওই রুটগুলো ব্যবহারের ফলে।
সম্প্রতি সুনামগঞ্জে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে ২৮ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুর রহমান জানান, সীমান্তে অপরাধপ্রবণতা কমাতে বিজিবি নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তবে একটি কথা সত্য, আমাদের বাংলাদেশের সীমান্তে কোনো কাঁটাতারের বেড়া নেই। আমার যে ফোর্স রয়েছে, তাও সংখ্যায় কিছুটা কম। প্রতি পাঁচ কিলোমিটারজুড়ে আমার একটি দল কাজ করে। তবে অপরাধীরা এখন আরও কৌশলী হয়েছে। তারা অপেক্ষায় থাকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী সরে যাওয়ার। যখন বিজিবির টহল দল সরে যায়, চোরাকারবারিরা মালপত্র নিয়ে আসে। আমরা এই অপরাধ রোধে অভিযান জোরদার করেছি।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ বলেন, সুনামগঞ্জে আমরা অনেক বড় বড় অবৈধ চালান আটক করেছি। এসব কাজে সীমান্তে বসবাসরত গুটিকয়েক মানুষ জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁরা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পথে পণ্য শহরে ঢুকিয়ে রাজধানী পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিচৌকি বসিয়েছি, বিশেষ করে আঞ্চলিক সড়কে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com