স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নেতৃবৃন্দ। শনিবার সন্ধ্যায় শহরের দৈনিক সুনামকণ্ঠ সভা কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি সুখেন্দু সেন। সভা পরিচালনা করেন সাধারণ স¤পাদক বিজন সেন রায়।
সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক নির্মল ভট্টাচার্য, সাংগঠনিক স¤পাদক একে কুদরত পাশা, দপ্তর স¤পাদক প্রভাষক দুলাল মিয়া, প্রচার স¤পাদক আনোয়ারুল হক, বাঁধ বিষয়ক স¤পাদক রাজু আহমদ, সদস্য সঞ্চিতা চৌধুরী, ওবায়দুল হক মিলন।
বক্তারা বলেন, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সবগুলো বাঁধে মাটির কাজই শেষ হয়নি। যেগুলোতে মাটি পড়েছে সেখানে করা হয়নি দুর্মুজ ও স্লোভের কাজ। লাগানো হয়নি ঘাস। ঝুঁকিপূর্ণ ৫১টি ক্লোজার (বড় গর্ত) মাটির কাজ শেষ করা হয়নি। এছাড়াও বাঁধ টেকসই করার জন্য সবগুলো বাঁধে দুর্বাঘাস লাগানোর কথা থাকলেও মাত্র ১৬৬টি বাঁধে দুর্বাঘাস লাগানোর দায়সারা কাজ চলছে। বাকিগুলোতে কবে লাগানো হবে তার নিশ্চয়তা নেই। তাই বাঁধ টেকসই হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের প্রথম আঘাত বাঁধের ক্ষতি করতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। দিরাই উপজেলার ২৭ ও ২৮নং পিআইসির কাজ বন্ধ রয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। রবিবার সেখানে কৃষক সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে।
বক্তারা বলেন, চলতি বোরো মওসুমে জেলার ৩৭টি ছোট বড়ো হাওরের ৫৯১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও ও রক্ষণাবেক্ষণে ৭৩৩ পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) কাজ বাস্তবায়ন করছে। ১২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সনের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সনের ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ করার কথা। গত ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহ¯পতিবার পর্যন্ত মাত্র ৩৩৬টি বাঁধের মাটির কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুর্বাঘাস লাগানো হচ্ছে ১৬৬টিতে। ৫৯টি ক্লোজারের মধ্যে মাত্র ১০টি ক্লোজারের কাজ শেষ করা হয়েছে। গড়ে ৮১ ভাগ কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে গড়ে ৬০ ভাগেরও কম কাজ হয়েছে। তাছাড়া দুর্বাঘাস লাগানোর জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাঁধে দায়সারা ঘাস লাগানোর কাজ চলছে।
তারা আরও বলেন, অপ্রয়োজনীয় ও অল্প ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধেও বিপুল বরাদ্দ দিয়ে সরকারের টাকা লোপাট করা হয়েছে। তারপরও এখনো অনেক বাঁধে মাটি পড়েনি। উপরে প্রলেপ দিয়ে পুরনো বাঁধগুলোকে নতুন দেখানোর খেলা শুরু হয়েছে। যেগুলোতে দায়সারা কাজ হয়েছে সেগুলোতেও ঘাস লাগানো হচ্ছেনা। অথচ ঘাসের জন্যও বিপুল বরাদ্দ রয়েছে।
সভায় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, লেখক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।