হাসান বশির ::
“আমার দুধের শিশু লইয়া আমি এখন কেমনে থাকমু। আমি কিচ্ছু চাইনা। আমার স্বামীর হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।”
শিশু স্বস্তিকাকে কোলে নিয়ে বিলাপ করছিলেন ঘাতকের আঘাতে নিহত রঞ্জিত দাস (২৫)-এর স্ত্রী সুজিতা দাস (২২)। তখনও শিশুটি মায়ের কোলে বসে চারপাশে মানুষজনের উপস্থিতি এবং তার মায়ের কান্না নীরব চোখে দেখছে। সে বুঝতে পারছে না- তার বাবা ঘাতকের ছুরির আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন।
গত শনিবার এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের প্যারীনগর গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, শনিবার সকাল ১০টার দিকে প্যারীনগর গ্রামের সামনের খালের ডোবারকম জায়গায় প্রতিবেশী অজিত দাসের হাঁসের পাল ডোবায় নেমে পানি ব্যবহার উপযোগিতা নষ্ট করছিল। ডোবার মালিক রঞ্জিত দাস (২৫) হাঁসের পাল ডোবা থেকে সরিয়ে দিতে গেলে অজিত দাস (২৫)সহ অন্যরা রঞ্জিত দাসকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তার বাড়ির সামনে ডোবার পাশে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে আঘাত করে। সাথে সাথে রঞ্জিত দাস মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তিনি গ্রামের জয় কুমার দাসের ছেলে ও স্থানীয় একটি ইটখলায় শ্রমিকের কাজ করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শী হেমেন্দ্র দাস (৩০) জানান, রঞ্জিত দাসকে বাঁচাবার চেষ্টা করেও বাঁচাতে পারেননি। তার চোখের সামনেই রঞ্জিত দাসকে নির্মমভাবে খুন করা হয়।
পুলিশ জানায়, পুলিশের বিশেষ অভিযানে প্রধান অভিযুক্ত অজিত দাস (২৫)সহ সকল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা জয়কুমার দাস (৫৮) মামলা দায়ের করলে প্যারীনগর গ্রামের অধীর দাসের ছেলে অজিত দাস (২৫), নিবারণ দাসের ছেলে নিখিল দাস (৬৫), নিরঞ্জন দাসের ছেলে নিকুঞ্জ দাস (৫২), অধীর দাসের স্ত্রী বীণারানী দাস (৫০) ও জয়ন্ত দাসের স্ত্রী সুরমা রানী দাস (২২)কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল বণিক জানান, নিহতের সুরত হাল রিপোর্ট তৈরি শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ।