1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৯:১৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগের ভাষা অভিযাত্রা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ভাষা অভিযান নামে কর্মসূচি করেছে জনউদ্যোগ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি। ‘সর্বস্তরের বাংলা চাই’ স্লোগানকে সামনে রেখে গত বুধবার বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
সুনামগঞ্জ জনউদ্যোগের আহ্বায়ক রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শামসুল আলম। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কবি ও লেখক ইকবাল কাগজী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. জমসিদ আলী, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. রোখসানা পারভীন চৌধুরী, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইফতেখার আলম, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন।
সংগঠনের সদস্য সচিব সাইদুর রহমান আসাদ’র সঞ্চালনায় বক্তারা বলেন, ভাষা আমাদের আত্মপরিচয়, মর্যাদা এবং গর্বের প্রতীক। সাংস্কৃতিক বিকাশ ও স্বাতন্ত্র্যবোধ নির্মাণেও ভাষার ভূমিকা প্রধানতম। আমাদের জাতীয় পরিচয়ও নির্ণিত হয়েছে ভাষাতাত্ত্বিক বিচারে। যখন বাঙালির আত্মপরিচয় মুছে দেয়ার জন্য ১৯৪৮ সালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করলেন- উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা- তখন না! না! না! বলে আমরা আমাদের তীব্র ও উচ্চকিত প্রতিবাদ রচনা করেছিলাম। ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি বুকের তাজা খুন দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলাম মাতৃভাষার মর্যাদা ও আত্মপরিচয়ের অমোচনীয় স্মারক। কিন্তু সেই গর্বের ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করতে পারছি না। বাঙালি, বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষায় কুঠারাঘাত করে আবারও আমাদের আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদাবোধকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে আমাদের চেতনা ও মানসের লড়াইয়ে পরাজিত শক্তিসমূহ। ধর্মের দোহাই দিয়ে, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বিশ্বায়নের মিথ্যে বুলি আউড়ে বাংলা ভাষাকে পরিণত করছে মানবিক চেতনাবিবর্জিত পরিত্যাজ্য ভাষায়। সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা ও সর্বত্র ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে প্রথমত বাংলার কথা বলা হলেও ঔপনিবেশিক ভাষাকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সত্ত্বেও শাসক, প্রশাসক, বিচারিক কর্মকর্তারা পর্যন্ত ঔপনিবেশিক ভাষাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। বাংলা ভাষার প্রতি এই অবহেলা, উন্নাসিকতার সরাসরি প্রভাব গিয়ে পড়ছে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ভাষা ব্যবহারেও। মিশ্র ও বিকৃতভাবে বাংলা ব্যবহার, অশুদ্ধ উচ্চারণে ভাষার রূপ, রস ও শক্তিকে করে তুলছে ¤্রয়িমান। এমনকি কেউ কেউ নানা বাহানায় বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, অবহেলা, অশ্রদ্ধা ও অনাগ্রহ তৈরি করছে সুকৌশলে। এ প্রক্রিয়া আমাদের ভাষাকে অপমানের সামিল।
এসময় শিক্ষার্থীদের মাঝে কয়েকটি দাবি সংবলিত লিফলেট বিতরণ করা হয়। বিদেশী ভাষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ করা, আদালত ও রাষ্ট্রের দাপ্তরিক কাজে বাংলাভাষার ব্যবহার নিশ্চিত, সকল জাতি-গোষ্ঠীর মাতৃভাষার অধিকার সুরক্ষা, গণমাধ্যমে ভুল বাংলা ব্যবহার বন্ধ, সম্প্রচার মাধ্যমের সংবাদ ও নানা ধরনের অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় শুদ্ধ উচ্চারণ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা রেখে সম্প্রচার নীতিমালা হালনাগাদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে বাংলা বানানের সমন্বয়, বাংলা একাডেমির ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বানান বিধানে যৌক্তিক সমন্বয়, সকল সাইনবোর্ড ও ব্যানার বাংলায় লিখা ও যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই, সেখানে শহিদ মিনার নির্মাণ করার দাবি জানান আয়োজকরা।
পরে শিক্ষার্থীদের মাঝে বাহান্নের ভাষা আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে সঠিক উত্তরদাতা ১০ জনকে বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com