হোসাইন আহমদ ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলাসহ চার উপজেলার দেখার হাওরকে বলা হয় বোরো ফসলের অন্যতম ভা-ার। দেখার হাওরে রয়েছে ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ শেষের আগেই দুই পাশে ভাঙন শুরু হয়েছে। বাঁধটি রক্ষায় সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তার বাঁধ ৬নং পিআইসি কমিটির অধীনে। দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের পিআইসি নং ৬-এর অধীনে প্রায় ১.০০০ কিলোমিটার বাঁধের কাজ নির্মাণাধীন রয়েছে। প্রকল্প এলাকার উত্তর পার্শ্বে ‘ছাইয়া কিত্তা’ নামক জায়গায় গত দুই বছর আগে বর্ষা মৌসুমে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাতের আঁধারে মহাসিং নদী ও বাঁধের পশ্চিমে বালি মাটি ও ভিট বালি উত্তোলন করে। এতে বাঁধের দুই পাশে মহাসিং নদীর অংশে ও হাওরের অংশে বড় বড় দুইটি ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় ২৭ ফুট গভীর গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ছাইয়া কিত্তা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের মাটি ভরাটের কাজ শেষ পর্যায়ে। গত ৭/৮ দিন ধরে বাঁধের দুই পাশে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে বাঁধের সকল মাটি দুই পাশে গভীর ডোবায় ধসে পড়ছে। দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধের দুই পাশে ভাঙন শুরু হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে ফসলরক্ষা বাঁধ এবং আর্থিক সংকটে পড়ছেন পিআইসি কমিটির লোকজন।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে দেখার হাওরের বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাওরের ছাইয়া কিত্তা ফসলরক্ষা বাঁধের দুই পার্শ্বে জিও ব্যাগ দিয়ে ডাম্পিং করা হচ্ছে। বাঁধের ফাটল অংশ আলাদাভাবে অতিরিক্ত মাটি ফেলে সংস্কার করার কাজ চলমান রয়েছে। কিন্তু বাঁধের দুই পাশে গভীর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় মাটি ধরে রাখা যাচ্ছে না।
আস্তমা গ্রামের কৃষক ও পিআইসি কমিটির সভাপতি আজিমুল হক জানান, আমাকে ছাইয়া কিত্তা বাঁধে কাজ করার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু বাঁধের কাজের শেষ পর্যায়ে এসে আমার বাঁধের দুই পাশে ভাঙন শুরু হয়েছে। কোনভাবেই ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না। এখন ভাঙন রোধে আরো অর্থ বরাদ্দ দিয়ে দুইটি গর্ত মাটি ভরাট করা প্রয়োজন। না হলে বাঁধ রক্ষা করা যাবেন না। বৈশাখ মাসে হাওরে পানি এলে এ বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে। আমি উপজেলায় লিখিতভাবে জানিয়েছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা কমিটির সদস্য সচিব ইয়াছিন খান বলেন, দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা হাওরের বাঁধটি আসলে হুমকির মুখে এবং ইতিমধ্যে বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক ভাবে দুই পাশে জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধের ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করেছি। বাঁধটি সম্পন্ন করতে পিআইসিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছি। বাঁধের ভাঙন রোধে নতুন করে ইস্টিমিট তৈরি করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করতে কাজ করছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা জানান, শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওরের ছাইয়া কিত্তা বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চতর টিমের সাহায্য নিয়ে ফসলরক্ষা বাঁধের ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।