স্টাফ রিপোর্টার ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজের অনিয়ম যেন পিছু ছাড়ছে না। কিছুদিন পূর্বে পুরাতন বাঁধ কেটে বাঁধের মাটি বাঁধেই দেওয়ার অভিযোগে একাধিক পত্রিকার শিরোনামে আসে শান্তিগঞ্জের বাঁধ নির্মাণকাজের অনিয়মের চিত্র। এবার নদীর পাড় কেটে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।
উপজেলার কাউয়াজুরি হাওরে ৩৫নং উপপ্রকল্পের পিআইসির বিরুদ্ধে পুরাতন সুরমা নদীর পাড় কাটার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। নীতিমালা লঙ্ঘন করে নদীর পাড় কেটে বাঁধে মাটি ফেলার মতো পরিবেশ বিধ্বংসী এই কাজ বন্ধে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের কাকচিরা এলাকার কাউয়াজুরী হাওরের প্রকল্প এলাকায় গিয়ে নদী পাড় কাটার সত্যতা পাওয়া যায়। এসময় দেখা যায়, এস্কেভেটর দিয়ে পুরাতন সুরমা নদীর পাড় কেটে মাটি বাঁধে নিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট পিআইসির লোকজন। পাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে পিআইসির সভাপতি কবির হোসেন জানান, পাড় কাটার অনুমতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দিয়েছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পিআইসির দুইটি ভাঙ্গা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভাঙ্গায় কোনোভাবে মাটি ফেলা হলেও নিচে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় পানির প্রথম ধাক্কায় এই বাঁধে ধস দেখা দিতে পারে। এতে কাউয়াজুরি হাওরের ফসলডুবির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বাসির বলেন, ৩৫নং প্রকল্পটি খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বাঁধের দুইটি ভাঙ্গা যেভাবে ভেঙ্গেছে যদি নিচে কোনো মাটি ভর্তি না করা হয় তাহলে পানি আসলে বাঁধ ভাঙ্গার আশঙ্কা রয়েছে। নদীর পাড় কেটে বাঁধ দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, নদীর পাড় কেটে কিভাবে মাটি নিয়ে যাচ্ছে পিআইসির লোকরা এটি আমাদের বোধগম্য নয়। এটি নীতিমালার মধ্যে পড়ে না। নদীর পাড়ে একটি রাস্তা রয়েছে। নদীর পাড় কাটায় রাস্তার ক্ষতি হবে।
নদীর পাড় কাটার ব্যাপারে পিআইসির সভাপতি কবির হোসেন বলেন, আজ ইউএনও স্যার ও এসও স্যারও কাজ দেখে গেছেন। তারাতো কোনো বাঁধা দেননি। এসও স্যার বলেছেন এতে আরও নদী খনন হবে। তিনি বলেন, ভাঙ্গার নিচে আমি বল্লি লাগানোর পর আমাকে অফিস থেকে বলা হইছে বল্লি লাগবে না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শান্তিগঞ্জ শাখা কর্মকর্তা ইয়াছিন খান বলেন, নদীর পাড় কাটার ব্যাপারে পিআইসিকে কেউ অনুমতি দেয়নি। পাড় কাটার খবর শুনে আমি সরেজমিনে সেখানে গিয়ে বন্ধ করেছি। পিআইসিকে সতর্ক করা হয়েছে আর যেনো এমন কাজ না হয়। আর যে জায়গায় কাটা হয়েছে তা ভরাট করার জন্য বলে দেয়া হইছে।