1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ০৯:০৫ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে ‘অলৌকিক’ অর্থনৈতিক রূপান্তর

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

বিশেষ প্রতিবেদক ::
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এমন এক অর্থনৈতিক রূপান্তর ঘটেছে যা অলৌকিকের চেয়ে কম কিছু নয়। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব ক্রমবর্ধমান, ভারতের সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান কৌশলগত মিত্রতা এবং চীন ও আরব বিশ্ব উভয়ের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্কের দ্বারা তা প্রমাণিত। দেশটি তৈরি পোশাক বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক হিসাবে তার অবস্থানকে দৃঢ় করছে। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আরব নিউজের গবেষণাধর্মী এক বিশ্লেষণে একথা বলা হয়েছে। পেন্টাগনের সাবেক বিশ্লেষক ওবাই শাহবন্দর এবং বৈদেশিক নীতি এবং মিডিয়া বিশ্লেষক আদেলে নাজারিয়ান প্রবন্ধটি লিখেছেন।
এতে বলা হয়, স্বাধীন অর্থনৈতিক তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০৩১ সালের মধ্যে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার যে বাংলাদেশকে একসময় ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ তকমা দিয়েছিলেন গত ১৫ বছরে মুসলিম বিশ্বের একমাত্র নারীনেত্রী হিসেবে গর্জে উঠেছেন হাসিনা। তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করেছেন যা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে যে – উন্নয়নশীল দেশগুলো কীভাবে লাখ লাখ মানুষকে টেকসইভাবে দারিদ্র্য থেকে উত্তোলন করতে পারে তার মডেল হিসাবে।
বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হিসেবে শেখ হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষ সামাজিক পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেছেন।
বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম দেশ এবং অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশের নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নের মূল প্রতিশ্রুতির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য শেখ হাসিনার প্রশাসন ১০০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তৃত ইশতেহার প্রকাশ করেছিল যা ‘সাংস্কৃতিক মুক্তির’ লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের ‘ভিশন ২০৪১’ এর দিকে অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অর্থনৈতিকভাবে উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে সুনির্দিষ্ট মানদ- স্থাপন করে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, তার পররাষ্ট্রনীতি প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা দ্বারা পরিচালিত এবং এটি তার প্রয়াত পিতার ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এই উক্তিটির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এই মতবাদ বৈশ্বিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে প্রতিফলিত করে, চীনের সাথে সম্পর্ক গভীর করার ইচ্ছা প্রকাশ করে এবং একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ, জাপান এবং কানাডাসহ মূল আন্তর্জাতিক মোড়লদের সাথে সম্পর্ক গভীর করে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা বিশ্বাস করেন যে, দেশটি এখনও প্রকৃত নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হতে পারেনি এবং বাংলাদেশ সম্প্রতি বলেছে যে, এটি ভারতের সঙ্গে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করে।
কৌশলগত ভারসাম্যের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি বৈদেশিক নীতি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত করতে সক্ষম হয়েছে। পশ্চিমের প্রধান রফতানি বাজার, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার ৪৩টি বিনিয়োগ বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করেছে এবং চীনা নির্মাণ সংস্থাগুলোকে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি প্রদান করেছে যা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা। হাসিনার সংস্কারগুলো নারীর ক্ষমতায়নে দুর্দান্ত কাজ করেছে এবং কার্যত দুর্ভিক্ষ নির্মূল করেছে, যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে দারিদ্র্যতা হ্রাস পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশাসন একটি অনন্য ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান সমুন্নত রাখতে এবং বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য লড়াই করেছে। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা পরিবারকে ভাসানচর দ্বীপে একটি নতুন খোলা সুবিধায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে, যেখানে তারা পরিষ্কার আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছে, নারীদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, শিশুরা স্কুলে যাচ্ছে এবং স্বাস্থ্যসেবা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। এটি এমন এক সময়ে একটি বিশাল মানবিক উদ্যোগ যখন মিয়ানমার ধীরে ধীরে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক গোষ্ঠীগুলো উপমহাদেশের জন্য গুরুতর নিরাপত্তা পরিণতির হুমকি দিচ্ছে।
এদিকে, দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করা বাংলাদেশি প্রযুক্তিবিদরা বলছেন যে, দেশের ভবিষ্যত বৈদেশিক সহায়তা গ্রহণের পরিবর্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর সাথে যুক্ত। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এসডিজির মূল মানদ- পূরণে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে এবং গ্রামাঞ্চলে উন্নয়ন আরও সম্প্রসারণ করা হাসিনার রূপকল্প ২০৪১-এ বর্ণিত একটি মূল লক্ষ্য। ভারতের অশান্ত উত্তর-পূর্ব সীমান্তের নিরাপত্তার জন্যও বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাবে এবং হাসিনা তার শাসনকে দৃঢ় করার সাথে সাথে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা কেবল বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।
সাম্প্রতিক সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য উন্মুক্ত রয়েছেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ স¤পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রতিহিংসাপরায়ণ নই, বরং খুবই খোলা মনের এবং উদার। বরং এটা ভালো, আমি সমালোচনা থেকে শুনতে পারি এবং শিখতে পারি।
তিনি আরও বলেন, দতার পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং তিনি কৌতুক করে বলেন, সেপ্টেম্বরে ভারতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে যখন বাইডেনের সঙ্গে তার দেখা হয়, তখন তিনি বাইডেন ও তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদের সঙ্গে সেলফি তোলেন। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যপন্থী রাষ্ট্রগুলোকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে এটি একটি অপ্রয়োজনীয় বাধা হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে, যারা সমৃদ্ধির জন্য একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নেয় এবং এই অঞ্চলে চরমপন্থার বিস্তারের বিরুদ্ধে একটি রক্ষাকবচ হিসাবে দাঁড়ায়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com