স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে জেলা পর্যায়ে খাদ্য অধিকার বিষয়ক নেটওয়ার্ক গঠন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের লতিফা কমিউনিটি সেন্টারের কনভেনশন হলে এফআইডিবি’র সিনিয়র প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর ফকরুল ইসলাম চৌধুরী সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিকার নেটওয়ার্কের বিভাগীয় সমন্বয়ক আইডিয়া নির্বাহী পরিচালক নাজমুল হক, শিক্ষাবিদ প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, বিশিষ্ট লেখক সুখেন্দু সেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সুনামগঞ্জ জেলা নিরাপদ সড়ক চাই’এর সভাপতি মহিম তালুকদার, সাংবাদিক শহীদনূর আহমদ, প্রগতি লেখক সংঘ সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি নির্মল ভট্টাচার্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে হাওরে অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনে সাথে মোকাবিলা করা জন্য ক্ষুদ্র মালিকদের খামার ও গ্রামীণ উদ্যোগকে শক্তিশালী করা প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপন করেন এফআইডিবির প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মুকুল দাস।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যও উল্লেখযোগ্য। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্যের নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের যথাযথ উদ্যোগ ও ভূমিকা পালনে নাগরিকসমাজসহ বাংলাদেশের এনজিওসমূহ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম বিশ্বব্যাপী; জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের ৯২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষ পর্যাপ্ত খাবার পায় না এবং এদের মধ্যে একটি বড় অংশের (৩৩ কোটি ৬০ লক্ষ) বসবাস দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে।
দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষুধা ও অপুষ্টির চ্যালেঞ্জটি জটিল এবং বহুমাত্রিক। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা ইতিমধ্যে খাদ্য অধিকার ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে। বিগত দশকের তুলনায় বাংলাদেশ বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি পরিস্থিতি ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়গুলোতে আগের চেয়ে অগ্রসর অবস্থানে রয়েছে। এসব অর্জন সত্ত্বেও আমরা দেখছি, এখনও সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্ষুধার্ত মানুষ এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাস করছে এবং আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের তুলনায় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখানে অধিকতর অরক্ষিত। এ প্রেক্ষাপটে ‘খাদ্য অধিকার’ ইস্যুতে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে প্রচারাভিযান, লবিং ও পলিসি এডভোকেসিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার ধারাবাহিকতায় দারিদ্রবিরোধী মঞ্চ (এপিপি) সহ বেশকিছু জাতীয়, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় সংস্থা এবং নেটওয়ার্কের সম্মিলিত উদ্যোগে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় সকলের জন্য পর্যাপ্ত, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সংস্থানের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে ২০১৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘দক্ষিণ এশিয়া খাদ্য অধিকার সম্মেলন’-এর শেষ দিন বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’-কে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কর্মরত সংগঠন, নেটওয়ার্ক ও ব্যক্তিবর্গের একটি সম্মিলিত জোট হিসেবে ঘোষণা করেছে; যা সংক্ষেপে আরটিএফ বিডি নামে অবিহিত হবে। এই জোট খাদ্য অধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশে নাগরিক সমাজের চলমান বিভিন্ন কার্যক্রম ও পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ও বিস্তৃত করবে।
এসময় বক্তারা বলেন, হাওরে অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনে সাথে মোকাবিলা করা জন্য ক্ষুদ্র মালিকদের খামার ও গ্রামীণ উদ্যোগকে শক্তিশালী করা প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ, দিরাই ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ১০৩টি গ্রামের কৃষক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আমরা নিয়ে আসতে পেরেছি। তারা এটির সুফলও ভোগ করছেন। আধুনিক সময়ে সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করে এগিয়ে যেতে হবে।
পরে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির গঠন করা হয়। শিক্ষাবিদ প্রফেসর পরিমল কান্তি দে-কে সভাপতি করেন কমিটির ঘোষণা করা হয়। কমিটির অন্যন্যরা হলেন সহ-সভাপতি নিগার সুলতানা কেয়া, ইয়াকুব বখত বাহলুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুল হক সরকার, কার্যকারী সদস্য সুখেন্দু সেন, নির্মল ভট্টাচার্য, সাংবাদিক শাহজাহান চৌধুরী, মহিম তালুকদার।