মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ ::
সুনামগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় গত দেড় বছর ধরে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। কোনো তদারকি না থাকায় এসব উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকরা আসা-যাওয়া করছেন ইচ্ছেমতো। এ অবস্থায় অনিয়মের কবলে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। এসএসসি পরীক্ষায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ৬টি পদ রয়েছে। পদগুলো হচ্ছে- উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, অফিস সহকারী/ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস সহায়ক ও নিরাপত্তা কর্মী।
জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর, জগন্নাথপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও শাল্লা- এই ছয় উপজেলায় প্রায় দেড় বছর ধরে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। অবশ্য জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, যেসব উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নেই সেখানকার অফিসিয়াল কাজকর্ম তিনিই দেখভাল করছেন।
জানা গেছে, এসব উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় কোনো কোনো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সপ্তাহে একদিনও আসেন না। প্রধান শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসায় অন্য শিক্ষকরাও যখন ইচ্ছে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছেন। শিক্ষকদের অনিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার ফলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কমে যাচ্ছে এসব উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে। এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে জরুরি কাজ থাকলে জেলা সদরে গিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে সে কাজ সারতে হচ্ছে।
জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চক্রবর্তী বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় বিদ্যালয়ে তদারকি একেবারেই কমে গেছে। নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেও পড়তে হয় সমস্যায়। নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন করতে হলে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা থাকা জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা না থাকায় বিদ্যালয়ে কোনো নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রেও পড়তে হয় ভোগান্তিতে।
সুনামগঞ্জ জেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের জেলা সভাপতি ও তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছের আলম সুবল বলেন, জেলার পাঁচ উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার পদগুলো শূন্য থাকার বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ভার্চুয়াল সভায় জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যে যে উপজেলাগুলোয় নেই সেখানে নতুন কারিকুলাম সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না এটিও তদারকি হচ্ছে না।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যে পাঁচ উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নেই সেখানকার দাপ্তরিক কাজকর্ম আমি নিজেই দেখভাল করি। শিক্ষা কর্মকর্তাদের তদারকির বিষয়টি দেখভাল করছেন একটি বিশেষ প্রকল্প থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত একাডেমিক সুপারভাইজার।