1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ০২:৩০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বেপরোয়া ইজারাদার, বিপাকে কৃষক-জেলে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার ::
সেচ দিয়ে মা মাছ ও পোনা মাছ আহরণ জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ হলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে শান্তিগঞ্জে জলমহাল শুকিয়ে মাছ শিকার চলছে। উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের পাখিমারা ও রামগুটা জলকরপুঞ্জ জলমহাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬ বছরের জন্য ইজারা নিলেও নীতিমালা মানছে না বীরগাঁও খালপাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। নিয়ম অনুযায়ী ৩ বছরে একবার জলমহালে ৫ ফুট পানি রেখে জাল দিয়ে মাছ আহরণের কথা থাকলেও ইজারার প্রথম বছরেই ইজারা নীতিমালা ও মৎস্য সংরক্ষণ আইন অমান্য করে সেলুমেশিন দিয়ে নির্বিচারে মৎস্য নিধন করছে ইজারাদার সমিতির সংশ্লিষ্টরা। এতে মৎস্য প্রজনন ব্যবহত হয়ে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হওয়ার পাশাপাশি হাওরের জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে জলমহাল শুকিয়ে মাছ আহরণ করায় সেচ সংকট দেখা দিয়েছে হাওরজমিতে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বোরোচাষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাখিমারা ও রামগুটা জলকরপুঞ্জ জলমহালে ডিজেল চালতি পাম্প দিয়ে জলমহাল শুকিয়ে নির্বিচারে মাছ ধরছেন ইজারাদারের লোকজন। ইতিমধ্যে এই জলমাহলের অধীন লাউয়া নদী তলদেশ শুকিয়ে মাছ ধরেছেন সংশ্লিষ্টরা। জলমহালের অর্ন্তগত বিল ডোবা শুকিয়ে মাছ ধরার হালচিত্র দেখা গেছে। প্রতিদিন জলমহালের কোথাও না কোথাও পাম্প বসিয়ে বিল শুকানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ১০৭ একর আয়তনের এই জলমহালটি ১৪৩০-১৪৩৫ বাংলা পর্যন্ত ৬ বছরের জন্য লিজ নেয় বীরগাঁও খালপাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। কাগজে কলমে জলমহালের মালিক সংশ্লিষ্ট সমিতি হলেও বাস্তবে স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক জনপ্রতিনিধি মিজানুর রহমান ও তার ছেলে সাদিকুর রহমান জলমহালটি ভোগদখল করছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
বীরগাঁও গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, জলমহালের ইজারাদারের কারণে এলাকায় কৃষক ও জেলে বিপাকে আছেন। তারা আইন ভঙ্গ করে বিল শুকিয়ে মাছ ধরছে। আমরা জমিতে পানি পাচ্ছি না। তাছাড়া এলাকায় জেলে সম্প্রদায় মৎস্য আহরণ করতে পারছে না। সমিতির লোকরা গোটা হাওর শাসনশোষণ করছে।
বাবু নামে একজন বলেন, জলমহাল সমিতির লোকরা বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। কোনো প্রতিবাদ করলে তারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। যেভাবে বিল শুকিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে আগামীতে অনেক মাছের প্রজন্ম পাওয়াই যাবে না।
এদিকে উপজেলার পাখিমারা ও রামগুটা জলকরপুঞ্জ জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরা হাওরে পানি সংকেটর ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছেন ওয়াসিম রায়মন নামের স্থানীয় কৃষক। মাছের প্রজনন রক্ষায় অবৈধ পাম্প জব্দের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে কথা হয় বীরগাঁও খালপাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আহমদের সাথে। বিল শুকিয়ে মাছ ধরার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। তবে বিল অনেক টাকায় আনা হয়েছে জানিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, অনেক টাকা দিয়ে বিল আনা হইছে। বিল কিভাবে মারবো আমরা জানি। কিন্তু কিছু মানুষ সাংবাদিকদের কাছে অহেতুক তথ্য দিচ্ছে। এই হাওর পুরাই খাস। আমি বিল আনছি। আমি যদি ধান চাষ করতে না দেই, কেউ কিছু করতে পারবেনি। স্থানীয় কৃষকদের উদ্দেশ্য করে এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। যদি সমিতির লোকজন সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে জলমহাল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, কৃষকদের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com