স্টাফ রিপোর্টার ::
লাউড়েরগড় পাথর সমিতির নামে যাদুকাটা নদীতে চলছে পাথর লুট। এই সমিতির সভাপতি লাউড়েরগড় ছড়ারপাড় গ্রামের মেহের আলীর ছেলে আব্দুল মোতালিবের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এমন অভিযোগের কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রতিদিন রাতের আঁধারে যাদুকাটা নদী থেকে পাথর উত্তোলন করে সিন্ডিকেট। পরবর্তীতে রাতের আঁধারেই ট্রাক, লরি ও ছোট পিকআপ ভ্যান দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বোল্ডার, ভুতু ও নুড়ি পাথর জেলা শহর সুনামগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্তে বিক্রি করা হয়। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে এমন অবৈধ ব্যবসা চললেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে পাথরখেকো সিন্ডিকেট দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের বালু-পাথর ব্যবসায়ী আকি নুর বলেন, লাউড়েরগড় পাথর সমিতির নাম দিয়ে মোতালিব ও তার লোকজন স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করার কথা বলে প্রতি সপ্তাহে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে। শুধু তাই নয়, যাদুকাটা নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। এসব পাথর সড়কপথে জেলা শহর সুনামগঞ্জসহ দেশের নানা প্রান্তে বিক্রি করা হচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলার মাহারাম গ্রামের বালু-পাথর ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, আগে নদীতে পাথরের ব্যবসা চালু ছিল। গত কয়েক বছর ধরে নদীতে ইজারাদাররা পাথর উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরেও গত দুই বছর ধরে লাউড়েরগড়ের মোতালিব নদীতে পাথর উত্তোলনের শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে সরকারকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে অদৃশ্য ক্ষমতার বলে।
এ ব্যাপারে যাদুকাটা বালু মহাল-১ এর ইজারাদার মেসার্স সোহাগ এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী রতন মিয়া বলেন, আমরা নদী থেকে কাউকে কোনো ধরনের পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেইনি। এমনকি অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন না করার জন্য একাধিকবার নিষেধ করেছি। তারা আমাদের নিষেধ না মেনে নির্বিঘেœ পাথর উত্তোলন করে আসছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মোতালিব অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার বলেন, আমি একা এখানে ব্যবসা করিনা। লাউড়েরগড়ের কমপক্ষে ৩০জন ব্যবসায়ী এখানে পাথরের ব্যবসা করে। তাছাড়া এখানে পাথর ব্যবসার সাথে শতশত মেহনতি মানুষ জড়িত রয়েছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জানতে তাহিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান রনির মোবাইলফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।