গত সোমবার (১৫ জানুয়ারি ২০২৪) নতুন মন্ত্রীসভায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সভায় সমাজ-দেশ-রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন। যেমন : মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি প্রতিরোধ (দুর্নীতির প্রতি শূন্য সহনশীলতা), অগ্নিসন্ত্রাসকে সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করা, সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, সরকারি শূন্যপদ পূরণ, নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের ধারা বজায় রাখা, রপ্তানি বহুমুখীকরণ (বিশেষ করে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য), গার্মেন্টস শিল্পকে সহায়তা, আইসিটি শিক্ষাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেশি করে কর্মমুখী করে তোলা।
নির্দেশনায় আরও আছে : যুব সমাজকে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চায় যুক্ত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া (যাতে তারা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে বিরত থাকতে পারে), দ্রব্যমূল্য বাড়তির কারণে মানুষের কষ্ট লাঘবের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, আরও কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার তৈরি ইত্যাদি গুরুত্ববহ বিষয়। তাছাড়, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে চারটি স্তম্ভের কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন : স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট জনগণ – এই চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে সব মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে যে, যে প্রকল্প প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে, সেগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে এবং যে প্রকল্প থেকে জনগণ উপকার পাবে সে প্রকল্প নিতে হবে। নতুন প্রকল্প নেওয়ার আগে সেটি কীভাবে জনগণের কল্যাণে লাগবে, তা খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করে যেন প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়।
বর্তমান বাংলাদেশের উন্নয়নের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং আগামী দিনের বাংলাদেশকে সুখী, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলতে নির্দেশিত নির্দেশনাগুচ্ছের কোনও বিকল্প নেই। বর্তমানে বা আগামী দিনে বাংলাদেশকে একটি সার্থক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ও পরিচালনা করতে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত যে-কোনও রাজনীতিক শক্তিকে এই নির্দেশনাগুচ্ছকেই প্রকারান্তরে বাস্তবায়িত করতে হবে। বিদগ্ধমহলের ধারণা, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি একটি স্মরণীয় মাইল ফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। কেননা যিনি অথবা যাঁরা যে-পদ্ধতিতেই রাষ্ট্র পরিচালনা করুন অথবা করবেন এই নির্দেশনার সারবত্তা এড়িয়ে গিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা সংক্রান্ত কোনও কাজ করতে পারবেন না। এই সব নির্দেশনা চিরায়ত, এসবের বাইরে গিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা অসম্ভব।