1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১০:৫১ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ক্ষুধার্ত মানুষ ক্ষুধার্ত বাঘের চেয়েও ভয়ঙ্কর

  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩

 

গত রোববার (১১ ডিসেম্বর ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠে একটি সংবাদবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “যাদুকাটা নদীতে ড্রেজার-বোমা মেশিন বন্ধের দাবিতে শুক্রবার বিকাল ৪টায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর বাজারে সভা করেছে বারকি শ্রমিক সংঘ, যাদুকাটা নদী শাখা। … সভায় বক্তারা বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাদুকাটা নদীতে বর্তমান ইজারাদার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালি-পাথর উত্তোলন করায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার বারকি শ্রমিক। একই সাথে ড্রেজারের তা-বে নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট, হাট বাজারসহ ধর্মীয় স্থাপনা। সভায় বক্তারা অবিলম্বে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে যাদুকাটা নদীতে অবৈধ ড্রেজার বোমা মেশিন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে কর্মহীন বারকি শ্রমিকদের কাজের সংস্থান করার জোর দাবি জানান প্রশাসনের প্রতি।”
উচ্চআদালতের নিষেধাজ্ঞার পর ইজারাদার সিন্ডিকেট নদীতে ড্রেজার ও বোমামেশিন নামিয়ে বালু উত্তোলন করে চলেছে এবং প্রশাসন এই আইন অমান্যকরণের অপরাধটিকে দেখেও দেখছেন না, বলে প্রতিপন্ন হচ্ছে। বিদগ্ধজনেরা মনে করেন, যাদুকাটা নদীতে আইন অমান্য করে বালু উত্তোলনের বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব দেওয়া প্রশাসনের একটি আইনি দায়িত্ব। এই দায়িত্ব থেকে প্রশাসন নিজেকে বিযুক্ত করে রাখতে পারেন না। যে-কোনও অজুহাতে বা অনবধানতাবশতও যদি প্রশাসন বিযুক্ত থাকেন, তাহলে আইনের দৃষ্টিতে কোনও বিশেষ মহল বা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত ‘ইজারাদার সিন্ডিকেট’-এর প্রতি অনুকম্পা প্রদর্শন বা বিশেষ সুবিধা প্রদানের ঘটনা ঘটে বলেই প্রতিপন্ন হয় এবং প্রকারান্তরে প্রশাসনের এইরূপ সদিচ্ছাবহির্ভূত নির্লিপ্তার দরুণ প্রশাসনের প্রশাসনিক পরিসীমার মধ্যে জনদুর্র্ভোগ বাড়িয়ে তোলে, জনক্ষোভের সৃষ্টি করে সামাজিক অস্থিরতাকে ডেকে আনার জনবিরোধী প্রবণতা প্রকাশিত হয়।
যাদুকাটার বালুমহালে যেসব কা- প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে, তার দুইটি দিক আছে। একদিকে হাজার হাজার বারকি শ্রমিক বেকার হচ্ছে এবং এই বেকারত্ব তাদেরকে পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে-পরে ও চিকিৎসা পেয়ে বেঁচে থাকার সাধারণ মানবিক অধিকার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রাখছে, অর্থাৎ তারা রাষ্ট্রের কাছ থেকে মানুষ হিসেবে খাদ্য-চিকিৎসা ইত্যাদির যে-টুকু অধিকার পাওয়ার কথা বেঁচে থাকার সে-অধিকার কিংবা সহজ সুবিধাটুকুও পাচ্ছে না, বলতে গেলে খাদ্যাভাবে মরতে বসেছে। অপরদিকে কতিপয় ধনী হাজার হাজার বারকি শ্রমিকের কাজ করে বেঁচে থাকার স্থান বালুমহালে আইন অমান্য করে, যাকে বলে, জবরদখল করে, বালু লুট করে নিজেদের ধনের ভা-ার বাড়িয়ে চলেছে। এমতাবস্থায় প্রশাসনের সুনজর পাচ্ছে না হাজার হাজার বারকি শ্রমিক, বরং প্রকারান্তরে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ধনীদের প্রতি প্রশ্রয়ের ছত্রছায়ারূপ আশির্বাদে পর্যবসিত হচ্ছে। বিদগ্ধ মহলের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে ক্ষুধার্ত মানুষের দুর্ভোগ এক পর্যায়ে সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করার অপশক্তিরূপে আবির্ভূত হবে। ভুলে গেলে চলবে না ক্ষুধার্ত মানুষ ক্ষুধার্ত বাঘের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
বিদগ্ধমহলের কেউ কেউ মনে করেন যে, বারকি শ্রমিকদের জীবন-মরণের এই সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের সদিচ্ছাই যথেষ্ট, প্রশাসন ইচ্ছে করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে ইজারাদার সিন্ডিকেটকে নিরস্ত করতে পারেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com