1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ০৬:১৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

এই মাৎষর্য ভালো নয়

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩

“অপরিমিত টাকার মালিককে আমরা বলি, লোকটা টাকার ‘কুমির’ অথবা ‘লোকটা ঘোড়েল লোক’। (ঘোড়েল হল ঘড়িয়াল, এক জাতের ছোট কুমির) কিংবা বলা হয়, ‘ও এক রাঘব বোয়াল’। শুধু তাই নয় ধনী মানুষের উল্লেখ করতে গিয়ে এমনও বলা হয়Ñ ‘যারা সামনে দাঁড়িয়ে ফটর ফটর করছে, ওরা তো চুনোপুটি, যারা গভীর জলের মাছ, রুইকাতলা, তারা কিন্তু চুপচাপ। আর জ্যেষ্ঠ ধনী যখন কনিষ্ঠ ধনীকে গ্রাস করে ফেলে, আমরা বলি, ‘বড় মাছ ছোট মাছকে এভাবেই খায়, এই তো মাৎস্যন্যায়’।” আপাতত বাংলাভাষার বিখ্যাত বৈয়াকরণ কলিম খান থেকে টুক্লিফাই এখানেই ইতি। এইটুকু উদ্ধৃতির পরিসরে উদ্দিষ্ট মাৎস্যন্যায়ের প্রসঙ্গটি এসে পড়েছে। এই সাৎস্যন্যায়ের প্রাপ্রঞ্চিকতা নিয়েই আজকের সম্পাদকীয়।
আমাদের সমাজে ‘সম্পত্তির পাহাড়’ যাঁরা গড়েন (আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হনও বলতে পারেন) তাঁরা কি আসলেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত আর্থসামাজিক ব্যবস্থাকাঠামোর পরিসরে বিদ্যমান একটি ‘মাৎস্যন্যয়’-এর মতো সামাজিক প্রতিবেশের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে করতেই ঘোড়েল, রাঘব বোয়াল, কুমির, কুবের ইত্যাদি হয়ে উঠেন? ইলন মাস্ক, বিল গেটস কিংবা মুকেশ আমবানি কি এমনি মাৎস্যন্যায়ের অনুকূল পরিসরে বেড়ে উঠেছেন, চুনোপুটি ভক্ষণ করে করে? অথবা আমাদের সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনও কি তাই? একদিক থেকে উত্তরটা খুব সহজ। জলের মধ্যে বড় মাছ ছোট মাছকে ভক্ষণ করেই বেঁচে থাকে। তিনি কতো কী ভক্ষণ করেছেন আমাদের জানা নেই। কিন্তু আমরা নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা তাঁর হলফনামা থেকে জানতে পেরেছি গত পনেরো বছরে তাঁর সম্পত্তি কতোটা বেড়েছে। গণমাধ্যমে এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘এমপি রতনের সম্পত্তির পাহাড়, স্ত্রীর নামে জমি বেড়েছে ৩০০ গুণ’। সমাজরূপ জলের সমুদ্রের গভীরে টাকার পাহাড় লুকিয়ে থাকে, কিন্তু ডাঙ্গার জমি লুকানো যায় না। হলফনামায় তাই জমির হিসেবটা এসেছে, টাকার পুরো হিসাবটা আসেনি।
বিদগ্ধমহলের ধারণা জমি যদি বাড়ে ৩০০ গুণ বাড়ে তবে টাকা বেড়েছে হাজার গুণেরও অধিক। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পত্তির পরিমাণ কতো হলফনামায় সেটা আসেনি বলাই বাহুল্য। সমাজের কোনও বিশেষ সুবিধাভোগী ব্যক্তির ক্ষেত্রে এইরূপ অস্বাভাবিক আয়বৃদ্ধি সমাজের সুস্থতার লক্ষণ নয়। এই অসুস্থতা থেকে মুক্তি না মিললে সমাজে নাগরিকদের মধ্যে ধনবৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে সমাজে মাৎস্যন্যায় প্রতিষ্ঠিত হবে। কলিম খান বলেছেন, “আবার এক ব্যক্তিমালিক যখন অন্য
ব্যক্তিমালিকের ধনসম্পত্তি দেখে সইতে পারে না, হিংসা-দ্বেষ বা ঈর্ষা করে আমরা বলি এটাই ‘মৎসর’। এই মাৎষর্য ভালো নয়।” মাৎসর্য মানে হলো পরশ্রীকাতরতা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com