যাদুকাটা-চলতি নদীতে নিয়মবহির্ভূত উপায়ে অবাধে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়ে একটি সম্পাদকীয় করা হয়েছে দৈনিক কালের কণ্ঠে (৩ ডিসেম্বর ২০২৩)। সেখানে বলা হয়েছে, “সুশাসনের অভাবে দেশে এমন সব দানবীয় চরিত্র তৈরি হচ্ছে, যারা আশপাশের মানুষের জীবনের সুখ, শান্তি সব কেড়ে নিচ্ছে। কেড়ে নিচ্ছে দুমুঠো ভাতের জোগান, বাড়িঘর, কৃষিজমি। এই সব অসহায় মানুষ সর্বস্বান্ত হয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে জন্মভিটা ছেড়ে, জীবনের সব স্মৃতি পেছনে ফেলে এক অনিশ্চিত উদ্বাস্তু জীবন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ দেশের আইন, প্রশাসন কেউই এই দানবীয় চরিত্রগুলোকে বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তরিক নয়।”
আমরা কালের কণ্ঠের অভিমত সমর্থন করি ও কালের কণ্ঠকে সাধুবাদ জানাই। পত্রিকাটির সম্পাদকীয়র শেষে বলা হয়েছে, “অভিযোগ আছে, একজন আওয়ামী লীগ নেতা এবং একজন বিএনপি নেতা এই বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। দুটি মহাল ইজারাও নিয়েছেন তাঁরা। পৃথকভাবে ইজারা নিলেও কর্মকা- পরিচালিত হয় যৌথভাবে। অভিযোগ আছে, ইজারার শর্ত ভঙ্গ হলেও প্রশাসন কঠোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না কিংবা নিতে পারছে না। আমরা আশা করি, যাদুকাটার বালুমহাল অবিলম্বে বাতিল করা হবে। দ্রুত বন্ধ করা হবে এই সর্বনাশা বালু উত্তোলন।”
এই ছয় বাক্যের অভিমতের প্রথম চার বাক্যের সঙ্গে একমত পোষণ করলেও শেষের দুই বাক্যে প্রকাশিত অভিমতের সঙ্গে একমত পোষণ করছি না। আমাদের
বক্তব্য হলো, ‘বালুমহাল ইজারা দেওয়া’ এবং ‘ড্রেজার ও বালু-পাথর উত্তোলনের যন্ত্র (সেইভ মেসিন) দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন করা’ বন্ধ হোক। তাহলেই প্রতি বছর বালু ও বারকি শ্রমিকেরা যে-পরিমাণ বালু-পাথর উত্তোলন করবেন পরবর্তী বছরে উজান থেকে সে-পরিমাণ বালু-পাথর প্রাকৃতিকভাবেই নিয়ম মতো নদীতে এসে জমা হবে। এতে করে দেশের ভেতরের উন্নয়ন কাজও বন্ধ হবে না, প্রাকৃতিক ভারসাম্যও বজায় থাকবেÑ নদীতীর ভাঙনের শিকার হবে না এবং বাস্তুহারা হয়ে লোকজনের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। এমনকি বালু-পাথর শ্রমিকরাও তুলনামূলক বেশি শ্রম করতে পারা আধুনিক যন্ত্র দানবের কাছে পরাস্ত হয়ে বেকার হয়ে পড়বেন না।