1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৪:১৫ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রসঙ্গ : সম্ভাবনাময় ওষুধ শিল্প

  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

এমন এক সময় ছিল, যখন বাংলাদেশ ছিল ওষুধ আমদানি নির্ভর দেশ। এখন বাংলাদেশের ওষুধ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রফতানি হচ্ছে বিশ্বের নামিদামি দেশসমূহে। এটি বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। ভবিষ্যতে দেশের রফতানি আয়ের বড় খাত পোশাক শিল্পের পরের স্থানটি দখলে নেবে ওষুধ শিল্প। ওষুধশিল্প সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের স্বপ্নের স্বর্ণদুয়ার খুলে দিয়েছে। রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এ শিল্প।
এ দেশের উৎপাদিত ওষুধ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণসহ বিশ্বের ১০৯টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। পৃথিবীর এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) বা অনুন্নত ৪৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ওষুধশিল্পে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। বাংলাদেশের ওষুধের কাঁচামালের ৩০ শতাংশ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে, বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ আসছে বিদেশ থেকে। দেশেই ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদন করতে পারলে প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকার) ওষুধ রপ্তানি করা সম্ভব।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্র মতে, দেশে ২৫৭টি নিবন্ধনকৃত কো¤পানির মধ্যে ১৯৪টি ওষুধ উৎপাদন করছে। তবে শীর্ষস্থানীয় ১০টি কো¤পানি মোট ওষুধের ৪৫ শতাংশ উৎপাদন করে। ওষুধ অধিদফতরের তথ্যানুসারে বিদেশ থেকে প্রযুক্তি ও উপাদান এনে এখানে তৈরি বা বাজারজাতকৃত সরকার অনুমোদিত জেনেরিক ওষুধের (অ্যালোপ্যাথিক, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক) সংখ্যা ১ হাজার ২০০টি। প্রায় ২৫ হাজার ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে এসব ওষুধ প্রস্তুত করছে প্রায় ৯০০ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কেবল অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ওষুধের সংখ্যা ২০ হাজার ৫০০। এ ছাড়াও বর্তমানে ২৬৮টি ইউনানি, ২০১টি আয়ুর্বেদীয়, ৯টি হারবাল, ৭৯টি হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলো প্রতি বছর আনুমানিক ২০০ কোটি টাকার ওষুধ উৎপাদন করছে। মানুষের ওষুধের পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রের ওষুধ তৈরিতেও অনুরূপ সক্ষমতা অর্জন করেছে এ সেক্টর।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন এমন প্রায় সব ধরনের ওষুধই এখন দেশের কোনো না কোনো ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে। এ দেশের মানুষের ভিতর যে রোগব্যাধি আছে, এর সব ওষুধ এখন দেশেই পাওয়া যায়।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ওষুধ রপ্তানিতে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। ওষুধ রপ্তানি হয় ৬ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলারের। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৩০ লাখ, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৭০ হাজার, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৪ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৪ কোটি ৬৮ লাখ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫ কোটি ৯৮ লাখ মার্কিন ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের ওষুধের বাজার ধরতে পারলে শিগগিরই ৪৫ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সর্বমোট ২৬৯টি অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ প্রস্তুতকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বছরে ২৪ হাজার ব্র্যান্ডের ১২ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদন করছে।
আমরা মনে করি, ওষুধের কাঁচামালের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত কাঁচামাল চাহিদার পুরো অংশ পূরণ করতে পারলে ওষুধ প্রস্তুতের খরচ কমিয়ে আনাও সম্ভব হবে। অবশ্য দেশীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত ওষুধের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে সরকার এ শিল্পকে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছে। সরকারের এই পৃষ্ঠপোষকতা ও কর অবকাশ সুবিধা অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প আরো প্রসারিত হবে তা দ্বিধাহীনভাবে বলা যায়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com