দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট টাঙ্গুয়ার হাওরে দুই দিনব্যাপী জ্যোৎ¯œা উৎসবের সমাপ্তি হলো। উৎসবে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকের আগমনে মুখরিত ছিল টাঙ্গুয়ার হাওর। এই উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা ছিল। এ উৎসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে, কেউ কেউ এমন মন্তব্যও করেছেন। তবে এই উৎসবে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়বে না বরং টাঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প প্রচার ও প্রসারে বিরাট ভূমিকা রাখবে এমনটাই দাবি করেছেন উৎসবের আয়োজকরা।
জেলার ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলায় মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই টাঙ্গুয়ার হাওর। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি এবং দ্বিতীয় রামসার সাইট। এই হাওরটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। তবে সৌন্দর্যের আধার বৃহৎ এই টাঙ্গুয়ায় পর্যটকবান্ধব পরিবেশ এখনো গড়ে ওঠেনি। পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য নেই হোটেল-মোটেল। তাছাড়া অবকাঠামো, যোগাযোগসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। পর্যটকদের থাকা-খাওয়াসহ জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। ফলে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্বেও টাঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প গড়ে উঠছে না।
গত ১৬ – ১৭ সেপ্টেম্বর দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত উৎসবের সফল সমাপ্তি হলেও রাতভর নৌকায় পর্যটকদের অবস্থান করার বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে অনেকেই মতপ্রকাশ করেছেন। যে কোনো সময় প্রকৃতি বিরূপ হয়ে যেতে পারতো। নিরাপত্তা বলয় যতই জোরদার করা হোক, বিশাল এই হাওরের মধ্যখানে অপ্রীতিকর কিছু ঘটলে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। হাওর উৎসব আর জ্যোৎ¯œা উৎসব যাই বলি, আগামীতে উৎসবস্থলের স্থান নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। আমরা মনে করি, জ্যোৎ¯œা উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার অনেক প্রচার ঘটেছে। এ উৎসব দেশি-বিদেশি পর্যটকদেরও দৃষ্টি কেড়েছে। তবে পরিবেশ এবং প্রতিবেশের যাতে ক্ষতি না হয় সে বিষয়টি সবসময় ভাবনা রাখা উচিত। আমরা আশা করি, সরকার হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প এলাকা গড়ে তুলতে দ্রুত উদ্যোগ নেবে।