সারাদেশে যত্রতত্র গড়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোর নিবন্ধন না থাকাতে স্কুলগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সরকার ২০১১ সালে স্কুলগুলো নিবন্ধনের জন্য একটি বিধিমালা জারি করলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন করেনি। এ অবস্থায় স্কুলগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনতে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ বছরের ১৬ আগস্ট মহানগর, জেলা ও উপজেলার জন্য তিন ধরনের টাস্কফোর্স গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায় বিভাগীয় ও মহানগরের ক্ষেত্রে টাস্কফোর্সের সভাপতি হবেন বিভাগীয় কমিশনার, সদস্য সচিব বিভাগীয় পরিচালক এবং সদস্য থাকবেন ডিআইজি, পরিচালক, স্থানীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। জেলা টাস্কফোর্সে সভাপতি থাকবেন জেলা প্রশাসক, সদস্য সচিব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সদস্য পুলিশ সুপার, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপ-পরিচালক সমাসেবা, উপজেলা টাস্কফোর্সে সভাপতি নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য সচিব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসি।
এ সবয় টাস্কফোর্সের কাজগুলো হচ্ছে নার্সারি, প্রিপারেটরি ও কিন্ডরগার্টেন স্কুলের অনুমতি, নিবন্ধন সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা ও বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করা। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, শিক্ষার্থী ভর্তি, ফি নির্ধারণ ও আদায়, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রশাসনিক অন্যান্য তথ্য পরীক্ষা। শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ শিক্ষাকার্যক্রম, আর্থিক কর্মকান্ড ও শ্রেণিভিত্তিক পাঠ্যপুস্তক অন্তর্ভুক্তি যাচাইকরণ। দেশের সব কিন্ডারগার্টেনগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করবেন টাস্কফোর্সের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং তা এক মাসের মধ্যে সুপারিশক্রমে জমা দিতে হবে। সেই সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়। বিধিমালার শর্ত না মানলে বন্ধ করে দেওয়া হবে কিন্ডারগার্টেন স্কুল।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারের এই উদ্যোগ একটি যুগোপযোগী। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে পরিচালিত হতো। অন্যদিকে পাঠ্য তালিকায় বইয়ের আধিক্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ বেড়েই চলছিল। পরিশেষে আশা করবো শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের এই উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।