‘হাওরে অবাধে চলছে পোনা নিধন’। এই বাক্যটি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদপ্রতিবেদনের শিরোনাম। সংবাদবিবরণীতে লেখা হয়েছে, “নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে জানিয়েছেন, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় জীবন বাঁচানোর তাগিদেই তাঁরা মা ও পোনা মাছ শিকার করছেন। মাছ শিকার বন্ধ রাখলে তাঁদেরকে না খেয়ে থাকতে হবে। তাঁদের দাবি, এবার জালে কম মাছ ধরা পড়ছে। এই বছরের অন্যান্য সময়ে মাছ বিক্রি করে জনপ্রতি প্রতিদিন গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পেলেও এবার ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে।”
পোনা হাওরে জন্মায় এবং বেঁচে থেকে বড় মাছে পরিণত হয় এবং একসময় মনুষ্যদেহের আমিষের অভাব পূরণ করে। মানুষ নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করে এই পোনা নিধন করে চলেছে প্রতিনিয়ত। এক বিবেচনায় এমনকি পোনা কোন ছাড়, আমিষের বৃহৎ উৎস স্বয়ং হাওরকেই নিধন করা চলছে দীর্ঘসময় নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অজুহাতেÑ সে-বিবরণ অনেক অনেক লম্বা, তার ফিরিস্তি এখানে দেওয়া সম্ভব নয়। ফিরিস্তির বদলে কেবল বলি, মৃত্যুপথযাত্রী কিংবা বিপন্ন টাঙ্গুয়ার হাওর তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
হাওর নিধনের প্রক্রিয়া বন্ধ না করা গেলে পোনা নিধনের প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্যে ব্যাকুলতা প্রকাশের কোনও মানে হয় না, বরং একধরণের অর্থহীনতায় পর্যবসিত হয়। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে দাবি উত্থাপন করছি যে, হাওর নিধনের সমাজসাংস্থিতিক কারণগুলোর নিরসন করুন এবং হাওরপাড়ের মানুষের বেঁচে থাকার জন্য বিকল্প কর্মসংস্থান তৈরি করুন। মনে রাখবেন, হাওর হাওরের মতো হয়ে বাঁচলে কিংবা হাওরের উন্নয়ন হলে পোনা নিধনের প্রক্রিয়াটিও স্বাভাবিকভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে।