আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠের পরিস্থিতি ক্রমাগত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং বিভিন্ন প্রধান দুই দলসহ অন্যান্য দলের আচরণ-কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রবণতা প্রকাশ পাচ্ছে। এইসব প্রবণতার মধ্যে পশ্চাদপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল ভাবালুতায় আকীর্ণ রাজনীতির প্রকাশ যে একেবারে নেই এমনটাও নয়। দেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপির এক রোড মার্চ কর্মসূচি থেকে এমন পশ্চাদপদ ও প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকা-ের বিষবাষ্প উদগীরণ হতে প্রত্যক্ষ করা গেছে। প্রধান বিরোধীদলের কাছ থেকে এমনটা কীছুতেই কাম্য হতে পারে না। এবংবিধ আচরণ দেশের রাজনীতির জন্যে ও বৈশি^ক উন্নয়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জনের পরিপন্থী। এটা কোনও শুভ রাজনীতিক সংস্কৃতি হতে পারে না। গত ২১ সেপ্টেম্বরে এমন অশুভ রাজনীতিক সংস্কৃতিক আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটেছে।
গণমাধ্যমের করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে “সরকার পতনের আন্দোলনে থাকা বিএনপির রোড মার্চ কর্মসূচি থেকে সাংস্কৃতিক উৎসবে হামলাকে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। তালেবানি সংস্কৃতিকে সামনে আনার জন্য এই হামলা বলে মনে করছেন তারা। গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে বিএনপির মিছিল থেকে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা স্মৃতি ভবনে অনুষ্ঠিত নাট্যোৎসবে হামলা হয়। এতে অন্তত ১০ জন নাট্যকর্মী আহত হন।”
রাস্তায় রাজনীতিক কর্মসূচি পালনের পরিসরে এবংবিধ আক্রমণ অবশ্যই সুস্থ রাজনীতির লক্ষণ নয়। এতে অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়ে প্রকারান্তরে বিদ্যমান নড়বড়ে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাটুকুও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়বে এবং বিকল্প স্বৈরতান্ত্রিকতাকে ডেকে এনে সর্বনাশের ষোলকলা পূর্ণ করবে।
এদিকে ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সুনামগঞ্জ সফর করে গেছেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বক্তব্য এই যে, একাত্তরের গণহত্যাকারী, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীরা এখনো রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে ধর্মের নামে হত্যা, সন্ত্রাস, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে এদেরকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। বিদগ্ধমহলের ধারণা, জাতিকে এমন নাজুক রাজনীতিক পরিস্থিতিতে ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের নাই মামু থেকে কানা মামুই ভালো। যতটুকু গণতান্ত্রিকতা আছে সেটাকে আরও উন্নত করতে না পারার বিপরীতে নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করার অজুহাতে সামরিক উর্দি কিংবা তালেবানি আলখেল্লাকে নিমন্ত্রণ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে হয় না। বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে আসন্ন নির্বাচন যাতে নির্বিঘেœ ও সকল রাজনীতিক দলের অংশগ্রহণে হয় প্রধান দুই দলসহ সকল দলের একমাত্র ইতিকর্তব্য হওয়া উচিত। এর অন্যথা হলে চলবে না।