গতকালের (শনিবার, ৮ জুলাই ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ ছিল ক্ষমতাসীন রাজনীতিক দলের শিক্ষাসংগঠনের একজন সদস্যের আত্মসাৎ সম্পর্কিত। বলা হয়েছে ৮ বস্তা চিনি তিনি ছিনতাই করেছেন এবং তজ্জন্য তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে কারগারে পাঠানের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ওদিকে সুনামগঞ্জের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষাগুরু প্রয়াত অধ্যাপক সীতেশ রঞ্জন আচার্য্যরে গ্রামের বসতভিটা জনৈক প্রতিবেশী দখল করে নিয়েছেন এবং তজ্জন্য তাকে কেউ আদলতে সোপর্দও করছেন না এবং আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোরও নির্দেশ দিতে সঙ্গত কারণেই অপারগ হচ্ছেন।
ঘটনা দুইটিই শেষ বিচারে সম্পদ আত্মসাতের। এই সম্পদ আত্মসাতের পরিস্থিতি কিংবা বাস্তবতা সমাজব্যবস্থার পরিসরে যতো দিন পর্যন্ত বজায় থাকবে ততো দিন পর্যন্ত সমাজে মাত্র ৮ বস্তা চিনি বা ধান-চাল ছিনতাই নয় বরং অপহরণ, মানবপাচার, জিম্মি করে স্বার্থ আদায়, চোরাচালান, অর্থপাচার, দখলচ্যুতি, চাঁদাবাজি, প্রতারণা, জালিয়াতি, বাটপারি, মাদকব্যবসা, লুট, ঘুষ, অবৈধ উপায় অবলম্বন, অনিয়ম, দুর্নীতি এবংবিধ অনৈতিক ও মানবতাবিরোধী কর্মকা- তো যেমন চলছে তেমন চলতেই থাকবে, তদুপরি সরকারের করা উন্নয়নের বারোটা না বাজিয়ে ছাড়বে না এবং উন্নয়নের দ্বারা সামাজিক শান্তি-সুস্থতাকে অর্জন ও বজায় রাখার প্রয়াসটিকে অহেতুক করে তোলে প্রাণ চিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটতেই থাকবে পার্থিব কিংবা অপার্থিব স্বার্থ সংক্রান্ত বিভিন্ন ঘটনায়। এমন সার্বিক সামাজিক-রাজনৈতিক নৈরাজ্যকে প্রতিরোধ করা যাবে না, যেমন প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না যৌতুক প্রদানে ব্যর্থ স্ত্রীকে খুন করে ফেলা, রাস্তাঘাটে নারীর সম্মানহানি বাড়তে বাড়তে ধর্ষণে পর্যবসিত হওয়া কিংবা অন্তর্ঘাতক দুর্বৃত্ত কর্তৃক রাজনীতিক সংগঠনগুলোর পদপদবী দখল করে ফেলা।
সে যা-ই হোক। আমরা আপাতত অধ্যাপক সীতেশ রঞ্জন আচার্য্যরে বসতভিটে নিয়ে কীছুটা হলেও ভাবিত আছি। আমরা যারাই শিক্ষিত মানুষ এবং একদা সুনামগঞ্জ সরকারি মহাবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি, তাঁরা প্রত্যেকেই এই প্রয়াত শিক্ষক সীতেশ রঞ্জন আচার্য্যরে কাছে কৃতজ্ঞ। প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি- এই মহান শিক্ষকের বসতভিটা দখল করার অপপ্রয়াস বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি অভিযোগ না পাওয়ার সঙ্গত যুক্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণে অগ্রসর না হন, তবে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে এই সম্পাদকীয়র মাধ্যমে আমরা অভিযোগ উত্থাপন করছি। আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনতিবিলম্বে প্রয়াত অধ্যাপক সীতেশ রঞ্জন আচার্য্যরে বসতভিটা রক্ষার আইনি পদক্ষেপ নিন।