1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অর্থনীতিকে বদলে দিতে হবে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই, ২০২৩

‘গণতন্ত্র বজায় রাখতে হলে আইনের শাসনের বিকল্প নেই’ এমন অভিমত প্রায়ই জ্ঞানীগুণিজনের কাছ থেকে প্রক্ষিপ্ত হয়ে থাকে এবং গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়। সত্যিকার অর্থে এই অভিমতের গুরুত্ব অপরিসীম তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কোনও কারণে সমাজে আইনের নিয়ন্ত্রণ অনুপস্থিত হয়ে গেলে সমাজটা সমাজ থাকবে বটে কিন্তু সেটা বর্বর সমাজে পর্যবসিত হবে। বর্তমান সময়ের পরিসরে আমাদের সমাজে আইনের অপপ্রয়োগসহ প্রয়োগের বহুরূপী অপ্রতুলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমন অনেক হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, প্রতারণা, দুর্নীতির ঘটনা এই বাংলাদেশে ঘটেছে যেগুলোর সঙ্গে এক শ্রেণির আইন প্রণেতা ও প্রয়োগকারীরা সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে এবং ক্রমাগত উঠছে, অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই। গণমাধ্যম তার সাক্ষী। উদাহরণ দিয়ে বললে বলতে হয়, একদা এই দেশের সংসদে বসে মুজিব হত্যার দায়মুক্তির আইন প্রণিত হয়েছিল এবং এই অন্যায় আইন প্রণেতারা ছিলেন সমাজ-দেশ-রাষ্ট্র পরিচালক পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ। কিংবা ধরুন সুনামগঞ্জের ৭টি খাল উদ্ধারের নির্দেশনা বিগত মাস ছয়েক যাবৎ উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এইভাবে একদিকে আইন অন্যায় করতে উদ্যত হবে আবার একদিকে উপেক্ষিত হবে কেন? আইন কোনও ব্যক্তি নয়, আইনকে ব্যক্তি প্রয়োগ করে হাতিয়ারের মতো। আইন প্রয়োগকারী এই ব্যক্তিকে সর্বাগ্রে বদলাতে হবে, এককথায় মানুষ হিসেবে তাকে মানবিক হয়ে উঠতে হবে। মানুষের মানবিক হওয়ার শিক্ষাকে উপেক্ষা করে আইনের অপপ্রয়োগ রোধ করা যাবে না, অর্থাৎ মানুষ মানবিক না হলে আইনের শাসনে স্বস্তি বোধ করবে না, আইন ভাঙবেই এবং প্রকারান্তরে সামাজিক অস্থিরতা অসামাজিক দুর্গতির প্রাদুর্ভাব ঘটাবে। মানুষকে প্রথমেই মানবিক করে তোলতে হবে, উদ্বৃতশ্রম আত্মসাতের ব্যবস্থা বজায় থাকলে মানুষের অমানবিক হয়ে উঠার পথ খোলা থাকবেই এবং পৃথিবীতে দানবিকতাও থাকবে, ইতোমধ্যে এটম ফেটেছে আরও ফাটবে কেউ আটকাতে পারবে না।
সব কথার সার কথা হলো, মানুষের দানবিক হয়ে উঠার প্রবণতা ও আশঙ্কার নিরসন চাই, তখনই কেবল আইনের শাসন বজায় থাকবে এবং গণতন্ত্র কারও কুক্ষিগত হাতিয়ার হয়ে উঠে প্রকারান্তরে মানবসমাজকে অত্যাচারী ও অত্যাচারিত এই দুই ভাগে ভাগ করে ফেলবে না। আমরা বিশেষ কেউ বা কোনও পক্ষ-প্রতিপক্ষের প্রতি কোনও কটাক্ষ কিংবা বিরূপতা প্রকাশ করছি না, কেবল বলতে চাই আইনের শাসন এই দেশে অবহেলিত হচ্ছে সুদূর অতীত থেকেই এবং বর্তমানে তা প্রকটাকার ধারণ করেছে এবং জাতীয় মুক্তির পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। এর অবশ্যই বহুবিধ কারণ আছে। এই কারণগুলোর কারণে উদ্ভূত সামাজিক, রাজনীতিক ও বিশেষভাবে আর্থনীতিক সমস্যাগুলোর নিরসন করা না গেলে আইনের শাসন সর্বকালের জন্যে ভাজা বরফ হয়েই থাকবে এবং গণতন্ত্রও বজায় থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না গণতন্ত্র নিজেও একটি হাতিয়ারের মতো কীছু, মালিকের মর্জিমাফিক সেটা ব্যবহৃত হয় মাত্র। এটি আসমান থেকে পড়ে না, গণতন্ত্র সমাজসঞ্জাত ব্যাপারÑ তাই এটির একটি শ্রেণিচরিত্র থাকে। কিন্তু বর্তমানের সমস্যা হলো, এই শ্রেণি চরিত্রের নিরিখেই ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে সমাজটাকে ‘ন্যায়কুঞ্জে’ পরিণত করা যাচ্ছে না এবং গণতন্ত্র বজায় থাকছে না বরং প্রতিনিয়ত সমাজনিয়ন্ত্রকদের প্রণিত ও প্রযুক্ত গণতন্ত্র ব্যাহত হচ্ছে। এর একটাই বিকল্প আছে, সমাজে গণতন্ত্র বজায় রাখার জন্যে সমাজটাকে বদলে দিতে হবে, গণমানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বদলে দিতে হবে সমাজের অর্থনীতিকে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com