একজন রোগীর আশা ভরসার জায়গা হচ্ছে চিকিৎসক এবং হাসপাতাল। অসুখ হলেই গ্রাম-গঞ্জের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ডাক্তারের দ্বারস্থ হয়। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকগণ কি আদৌ গ্রাম-গঞ্জের এই খেটে খাওয়া মানুষের ভরসাস্থল হতে পেরেছেন? হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এ মহৎ পেশার জায়গাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।
সদর হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থায় এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা সেবা দিন দিন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই সাধারণ রোগীরা বেসরকারি ক্লিনিক কিংবা প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
গতকাল দৈনিক সুনামকণ্ঠ’র শীর্ষ সংবাদে প্রকাশ ‘জেলা সদর হাসপাতালে রোগীদের সেবাদানের জন্য ১২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলেও কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে অনেক রোগীকেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। নিয়মিত না আসলেও এসব বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বেতন-ভাতা নিয়মিত উত্তোলন করছেন। ছুটি না নিয়েও তারা দিনের পর দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন।’
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি বা ছুটি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকাও অনেক ডাক্তারের নিয়মে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনিয়মিত উপস্থিতির কারণে রোগীরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর অন্যদিকে নানা অজুহাতে হাসপাতালে না গিয়ে চিকিৎসকরা প্রাইভেট চিকিৎসাসেবায় ব্যস্ত থাকছেন।
চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি। এ অধিকার থেকে হাওরপাড়ের সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছেন কতিপয় চিকিৎসক। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের কর্তব্যে অবহেলা কাম্য নয়। চিকিৎসা বাণিজ্য থেকে চিকিৎসকদের বেরিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকদের আন্তরিক হতে হবে। সেবার মনোভাব নিয়ে রোগীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।