1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০১:১৮ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জমি দখল করবেন না

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

‘সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ : মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জমি দখলের পাঁয়তারা’। কে একজন একবার তর্কে জড়িয়ে বলে ফেলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা এই দশটিকে যুদ্ধ করে মুক্ত করেছিলেন বলে দেশটির মালিক হবার কথা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদেরই। কিন্তু তাঁদের অস্ত্র জমা রেখে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো এবং দেশের মালিক তাঁরা হতে পারলেন না এবং কয়েক বছরের মধ্যে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। বিখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবিকে তাঁর স্বাধীন করা দেশের মাটিতেই ভিক্ষা করে জীবন বাঁচাতে হয়েছিল।’ এরকমই ছিল সেই বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধার কথাগুলো। আর আমাদের কথা হলো কাঁকন বিবি দোয়ারাবাজারেরই মানুষ। এইখানেই তিনি ভিক্ষা করেছিলেন, তাঁর বিখ্যাত সব সহযোদ্ধারা আশেপাশেই ছিলেন, বহাল তবিয়তে, কাঁকন বিবির প্রতি সকলেই ছিলেন নির্বিকার ও অনুসন্ধিৎসু। দেশ তাঁর সন্ধান পেয়েছিল তৎকালে বলতে গেলে নিতান্ত তরুণ একজন সাংবাদিক রণেন্দ্রকুমার পিংকুর অদম্য সন্ধিৎসুতার কল্যাণে এবং শেখ হাসিনা তাঁকে করেছিলেন পুনর্বাসিত। কিন্তু কথা হলো, কাঁকন বিবি যখন মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তখন মুক্তিযোদ্ধারা আসলে কোথায় ছিলেন? তাঁরা কি তাঁরা যে মুক্তিযোদ্ধা সে কথাই ভুলে গিয়েছিলেন? এমন হাজারটা প্রশ্ন করা যেতে পারে। যার কোনও সদোত্তর কারও কাছ থেকে পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। মূল কথা হলো মুক্তিযোদ্ধারা দেশটা যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছিলে এবং সে-কারণে এই দেশের উপর তাদের অধিকার জন্মেছিল, সে-অধিকার তাঁরা ছেড়ে দিয়েছিলেন, নিজেদের প্রতিপক্ষের হাতে এবং আজ তারই প্রকাশ ঘটছে, মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জমি দখলের পাঁয়তারা করতে সাহসী হয়ে উঠেছে কেউ। এই কেউ ভাবছেন না যে, যার জমি দখল করতে উদ্যত হয়েছেন তিনি একদা এই মুক্তিযোদ্ধাটিই এই পুরো দেশটিই পাকিস্তানিদের হাত থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন এবং দেশের সকল মানুষ বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক হতে পেরেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া দেশে আসলে কেউ যখন মুক্তিযোদ্ধার ভোগদখলীয় জমিবাড়ি কিংবা অন্য কোনও সম্পদ দখল করার পাঁয়তারা করেন এবং তার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করতে হয় মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে, তখন স্বাভাবিকভাবেই বোধোদয় ঘটে যে, আমরা জাতিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদাহানির পঙ্কিলতায় ডুবে আছি, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। অর্থাৎ জয়কে পরাজয়ের গ্লানির চাদরে ঢেকে দিয়েছি, স্বাধীনতাকে পরাধীনতায় পর্যবসিত করেছি। প্রকৃতপ্রস্তাবে আমরা হতভাগ্য জাতি, যে-জাতি তার বীর সন্তানের মর্যাদা দিতে জানে না। সমাজমানতার এই দারিদ্র্য, এই চিৎপ্রকর্ষহীনতা যতদিন না কাটবে ততো দিন জাতিগত সর্বপ্রকার উন্নয়ন কার্যত ব্যর্থতায় পর্যবশিত হবে, এখন পর্যন্ত তা-ই হয়ে আসছে, বৈষয়িক কোনও উন্নয়নই মনের উন্নয়নে উত্তীর্ণ হতে পারছে না। এই জন্যে দেশের সম্পদ বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে, দেশের বিরুদ্ধে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র চলছে প্রতিনিয়ত। ‘মুক্তিযোদ্ধার ভোগদখলীয় জমিবাড়ি কিংবা অন্য কোনও সম্পদ দখল করার পাঁয়তারা’ যখনই ঘটুক না কেন, সেটা স্বাধীনতার পরপরই হোক বা অর্ধশতাব্দী পেরিয়েই হোক, তাতে ইতরবিশেষ কীছু ঘটে না, যা হবার তা-ই হয়। আর্থাৎ এবংবিধ যে-কোনও কার্যকলাপ জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক লেপন করে মাত্র। এই কলঙ্ক মুছে দিতে না পারলে জাতিগতভাবে আমার পিছিয়ে থাকবো।
যথেষ্ট বলা হয়েছে। এর বেশি আর কীছু বলার আছে বলে মনে হয় না। সমাজ ও সরকার সকলকেই বলছি, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতি প্রতি একটু নজর দিন। কেউ যেন তাদের জমিবাড়ি, ভিটেমাটি দখল করে না নেয়। একটু যতœ নিন। ভুলে যাবেন না, রাষ্ট্রক্ষমতা তাঁদের হাতেই থাকার কথা ছিল, সেটা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, সেটা করতে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে জাতির জনককে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com