গত সোমবারের (১৯ জুন ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদশিরোনাম ছিল, ‘দুর্নীতির অভিযোগে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্ট্যান্ডরিলিজ’। একজন তথাকথিত (মনে হচ্ছে, তিনি যথার্থ অর্থে তিনি শিক্ষা কর্মকর্তা নন, তাই তথাকথিত) শিক্ষা কর্মকর্তার জন্যে যতোটা খারাপ খবর ততোটাই ভালো সাধারণ মানুষের জন্যে, দেশের জন্যে ও দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্যে। গণমাধ্যমে আসে না কিন্তু সাধারণ মানুষের মাঝে চাউড় হয়ে ফেরে শিক্ষাক্ষেত্রে এমন খবরের অভাব নেই, প্রতিনিয়ত শোনা যায় বিভিন্ন গালগল্পের আসরে, আড্ডা-চাড্ডায়। মাঝেমধ্যে যে গণমাধ্যমে আসে না এমনও নয়, দুয়েকটা আসে। লোকেরা চমকিত হন, প্রতিকার আশা করেন, কিন্তু কীছুটা আলোড়ন-বিলোড়ন হলেও প্রকৃতপ্রস্তাবে কোনও প্রতিকার হয় না। দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষার প্রশাসনিক পরিসরে যে-হারে দুর্নীতি হয় সে-হারে যেমন প্রকাশ নেই, তেমনি কালেভদ্রে দুয়েকটি প্রকাশ পেলেও তার প্রতিকার হয় বলে তেমন শোনা যায় না। গত ক’দিন আগে গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে যে, এক গৃহবধূ দশ বছর যাবৎ একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেছেন কিন্তু বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে পাঠদান কাজে অংশ নিচ্ছেন না, কিন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি তাঁর নিয়ন্ত্রণে বলে প্রতি মাসের বেতন ঠিকই তার ঘরে গিয়ে হাজির হচ্ছে। শিক্ষাপ্রশাসনের পরিসরে এমন দুর্নীতি দশ বছর যাবৎ প্রতিকারহীনভাবে কী করে ঘটে চলে এবং প্রশাসন আসলে কী করেন? একটি প্রশ্ন বটে।
শিক্ষা কর্মকর্তাকে তথাকথিত বলা হয়েছে, কারণ তিনি প্রশাসনের পদাধিকার বলে যতোটা আমলা ততোটা শিক্ষানুরাগী নন, শিক্ষাপ্রসারের কাজে নিরত না হয়ে বেতনের অতিরিক্ত আয় আকরের আত্মস্বার্থ হাসিলে তিনি ব্যস্ত থাকেন বেশি। বিদগ্ধজনেরা এমনই মনে করছেন। তাঁদের ধারণা প্রকৃতপ্রস্তাবে তিনি শিক্ষানুরাগী হলে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠতো না। আমরা এর বিভাগীয় তদন্ত চাই এবং সে-তদন্তকে অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে। অন্যথায় সর্বজনস্বীকৃত মতে প্রশাসনের ভেতরে যে-দুর্নীতি বিদ্যমান আছে প্রকারান্তরে সে-দুর্নীতিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে এবং সরকারের দুর্নীতির প্রতি শূন্যসহিষ্ণুতার নীতি ব্যর্থ হয়ে গিয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ও দেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত করেই রাখবে এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে দেশ পিছিয়ে পড়বে।