1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ০৩:১২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

প্রজন্মের মননে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করতে হবে

  • আপডেট সময় সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

শনিবার রাতে কাশিমপুর কারাগারে একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধী, আলবদর নেতা ও জামায়াতের অন্যতম অর্থ যোগানদাতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এই রায় কার্যকর হওয়ার মধ্য দিয়ে একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ষষ্ঠ অপরাধীর ফাঁসি কার্যকর করা হলো। যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির এই রায় কার্যকরের মধ্যদিয়ে জাতি কলঙ্ক মোচনে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। পর্যায়ক্রমে সকল মানবতাবিরোধীদের ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের এই দেশ একদিন চিরকলঙ্কমুক্ত হবে।
মানবতা বিরোধী অপরাধী মীর কাসেম আলী দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে পালিয়ে যান লন্ডনে। সেখান থেকে সৌদি আরবে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে মুসলমানদের ক্ষয়ক্ষতি, মসজিদ-মাদরাসা ভাঙার বর্ণনা আর পাকিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশি মুসলমানদের ‘মানবেতর জীবনে’র কথা বলে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিপুল অর্থ যোগাড় করেন তিনি। পরে ওই অর্থ মসজিদ-মাদরাসা পুনঃনির্মাণ কিংবা ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে ব্যয় না করে নিজেই ভোগ করতে থাকেন। গড়ে তোলেন এনজিও। ৭৫-এর পর দেশে ফিরে আসা মীর কাসেম মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনৈতিক সাহায্যপুষ্ট রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী নামের এনজিওর কান্ট্রি ডিরেক্টর হন। সেই এনজিওর অর্থে তিনি একের পর এক গড়ে তোলেন ব্যবসায়িক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সেই থেকে জামায়াতের সাংগঠনিক ব্যয় নির্বাহে সবচেয়ে বেশি অর্থের যোগানদাতা মীর কাসেম আলী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লবিস্ট নিয়োগ ও আর্থিক লেনদেনের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি।
বাঙালি যে বীরের জাতি, লড়াকু জাতি ইতিহাস এ সত্য প্রমাণ করলেও অস্বীকার করার অবকাশ নেই যে, স্বাধীন দেশের পবিত্র মাটিতেই কতিপয় বিশ্বাসঘাতক, দেশদ্রোহী, ঘৃণ্য রাজাকারেরও জন্ম হয়েছিল। এই রাজাকাররা নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতে ধর্মকে ব্যবহার করে স্বাধীন বাংলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল এবং দখলদার পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হত্যা, খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজসহ জঘন্য মানবতাবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধকালীন অপতৎপরতাই শুধু নয় রাজাকাররা স্বাধীনতার পর শহীদদের রক্তে রঞ্জিত বাংলার মাটিতে রাজনীতি করার অধিকার পায় এমন কি মন্ত্রীর পদে আসীন হয়।
আমরা দেখছি একের পর এক যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হচ্ছে আর স্বাধীনতাবিরোধীরা গর্তে ঢুকে যাচ্ছে। বাংলার মাটিকে কলঙ্কমুক্ত করতে আ.লীগ সরকারকেই ভূমিকা রাখতে হবে। আজ লাখ লাখ মানুষের মনে যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে তা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সাহস ও দৃঢ় মনোবলের ফলে। আওয়ামী লীগ সরকারকেই রাজাকার-আলবদর যুদ্ধাপরাধীর বিচার স¤পন্ন করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারই প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাহী রাজনৈতিক দল এ কথা বাংলার মানুষ আজ ¯পষ্টভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছে।
রাজাকার-আলবদররা ভেবেছিল স্বাধীনতার এতো বছর পর মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি আর জাতীয় জীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলবে না। গুরুত্ব বহন করবে না। রাজাকাররা বাংলার মাটিতে বহাল তবিয়তে বসবাস করবে। কিন্তু সহজ চিন্তাকে বিরাট এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় স্বাধীনতার পর জন্ম নেয়া নতুন প্রজন্মের তরুণরা। নতুন প্রজন্মের চিন্তাকে গুরুত্ব দিয়ে সমগ্র জাতি আজ ভাবতে শিখেছে। আজ কোটি কোটি কণ্ঠে রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে ধ্বনি-প্রতিধ্বনি হচ্ছে। আমরা মনে করি, শুধু মানবতা বিরোধীদের ফাঁসি দিলেই দায় শেষ হয়ে যাবে না। প্রয়োজন প্রজন্মের মনমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে তোলা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com