1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ০৭:১৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নিয়মিত এমন আলোচনা সভা অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা রাখি

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩

 

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরিতে বলতে গেলে সময়ের বেশ বড় ব্যবধানে একটি আলোচনা সভা হয়ে গেলো, গত মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল ২০২৩)। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের নিমন্ত্রণপত্রে সেটাকে ‘হাওর এলাকায় শিক্ষার বাস্তবতা : সুনামগঞ্জের গল্প’ শীর্ষক সেমিনার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রবন্ধ উপস্থাপক সুনামগঞ্জের শিক্ষার বাস্তবতাকে ‘বেহাল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া এই বেহাল অবস্থার জন্যে সরাসরি কর্তৃপক্ষীয় ও সংশ্লিষ্ট কাউকে দায়ী করেন নি, কিন্তু সতর্কতার সঙ্গে বলেছেন, ‘এটা শুধু প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতা না; নেতৃত্ব দূরদর্শীতা, সক্ষমতা এবং আবেগ-বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতাও এখানে বড় প্রশ্ন।’ উদ্ধৃতচিহ্নের ভেতরের এই বাক্যটি সবকীছু বলতে চায় কিন্তু তার ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা দ্বিধার উত্তরণ ঘটে না। সে-দ্বিধা প্রকৃতপ্রস্তাবে প্রবন্ধ উপস্থাপকেরই অন্তরের দ্বিধা অর্থাৎ শ্রেণিচরিত্র। তিনি হাওর এলাকার শিক্ষার বেহাল দশার জন্যে প্রথমেই উল্লেখ করেছেন প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতাকে। কিন্তু আমরা তাঁর মতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, বিশ^বিরল প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য-বিশিষ্টতাই হাওরাঞ্চলের প্রাণভোমরা, এটা কোনও সীমাবদ্ধতা নয়, এই প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যই হাওরের বিপুল জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে এখানকার মানবগোষ্ঠীকে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এই প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যকে পুরোপুরি সুরক্ষা দিয়ে ও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় মানব কল্যাণের দিকে নিয়ে যাওয়াই হলো মানুষ হিসেবে আমাদের রাজনীতিক ও আর্থনীতিক চলিতকর্ম, সাংস্কৃতিক বিশ^দৃষ্টিভঙ্গির মাপকাঠিতে যাকে বলা যায়, একমাত্র মানবিক নৈতিকতা। এই মানবিক নৈতিকতা আমাদের রাজনীতির আদর্শ নয়, এটা রাজনীতির ব্যর্থতা, সাধারণ মানুষের আবেগ-বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতার কোনও ভূমিকা এতে নেই। প্রবন্ধকার এই মানবিক নৈতিতা থেকে বিচ্যুত হয়ে অত্যাচারিতের উপর অব্যাহত মানবকৃত অত্যাচারের দায়কে প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধাতার উপর ন্যাস্ত করে দিয়ে প্রকৃতপ্রস্তাবে সত্যকে আড়াল করার নৈতিকতাবহির্ভূত প্রয়াস পেয়েছেন। এমন করাটা ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে, এই নৈতিকতার বাইরে মানবসমাজের জন্যে অন্য কোনও নৈতিকতা নেই। এই নৈতিকতার চর্চাকে উজ্জীবিত রেখেই হাওর উন্নয়নের কাজে নামতে হবে। তাহলেই ‘হাওর এলাকায় শিক্ষার বেহাল দশা’ কাটতে পারে, অন্যথায় নয়।

এই দৃষ্টিভঙ্গিকে বজায় রেখে প্রাবন্ধিক অন্তত ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের অক্ষম নেতৃত্ব, নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা, অক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার ও নৈতিক স্খলনের ইতিবৃত্তের সংক্ষিপ্ত বয়ান তোলে ধরে বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে কী করতে হবে তার একটি মঙ্গলাভিমুখি পথনির্দেশনা দিতে পারতেন। তিনি প্রমাণ করতে পারতেন, একজন শেখ হাসিনার আগে এই দেশকে অনুন্নয়নের গহ্বর থেকে টেনে তুলতে চেষ্টা করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পিতা বঙ্গবন্ধুর পথ ছিল অনেকটাই অপুঁজিবাদী বিকাশের পথ এবং হাসিনার পথ পুরোপুরি পুঁজিবাদী, এটাকে এড়ানো তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।

এই পুঁজিবাদী বিকাশের পথ নিয়ে আপাতত এর বেশি কীছু বলতে চাইনা এবং সম্পাদকীয় স্তম্ভ এর যথার্থ স্থানও নয়। আলোচ্য প্রবন্ধের বিষয়ে কেবল বলতে চাই, এই প্রবন্ধে সন্নিবেশিত ও আলোচিত প্রায় প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মত প্রকাশের অবকাশ রয়ে গেছে, আপাতত সে-গুলো ব্যক্ত করার যৎকিঞ্চিৎ অবকাশও এখানে নেই। কিন্তু প্রবন্ধকারকে (ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার) ধন্যবাদ জানাতেই হয় এবং না জানালে সেটা হবে একেবারেই অকৃতজ্ঞতা, সেটা এই জেন্যে যে, তিনি একটি ইতিবাচক আলোচনার সূত্রপাত করেছেন, সাধারণত এমন আলোচনা সচরাচর হয় না বা সেটাতে আমরা অভ্যস্ত নই, যদিও মানসম্মত মানবিক উন্নয়ন চাইলে আলোচনা-পর্যালোচনা ও তর্ক-বিতর্কে অভ্যস্ত হয়ে উঠতেই হবে। কোনও কীছু না জেনে কেবল পদের জোরে বক্তা হয়ে উঠলে চলবে না। এই মওকায় আমরা শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সভাপতি ও সম্পাদককেও সাধুবাদ জানাই এবং তাঁদের কাছে যথাসম্ভব অল্পদিনের ব্যবধানে নিয়মিত এমন আলোচনা সভা অনুষ্ঠানের একান্ত প্রত্যাশা রাখি।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com