সংবাদে প্রকাশ ‘সুনামগঞ্জের দেখার হাওরে ধান কাটা উৎসবের উদ্বোধন করলেন তিনমন্ত্রী। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় সুনামগঞ্জের দেখার হাওরে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ে উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম (ধান)কাটা উৎসবের উদ্বোধন করেন।’ এবং কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য ‘ হাওরে ১ হাজার হারভেস্টার ধান কাটছে’ উদ্ধৃত করে পত্রিকায় সংবাদ শিরোনাম করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের হাওরজুড়ে এক হাজার হারভেস্টার ধান কাটছে এই বাস্তবতার একটি আর্থনীতিক তাৎপর্য আছে, অভিজ্ঞমহলের ধারণা যদিও হাওরের চাহিদা মোকতাবেক এর সংখ্যা হওয়া উচিত তিন হাজার। অর্থাৎ ভাটির কৃষিতে যন্ত্রায়নের একটি ধাপ এবং তৎপ্রেক্ষিতে ধানকাটা মজুরের প্রাচীন পেশার বিলুপ্তি সম্পন্ন হলো। হাওরের দিগন্তজুড়া ফসলী মাঠের বিশাল প্রান্তরে গ্রীষ্মের কড়া রোদে আর কাস্তে হাতে কৃষককে ধান কাটতে দেখা যাবে না। এই তো কীছু দিন আগেও ‘ধান মাড়াই’ করতে কৃষকেরা গরু ব্যবহার করতেন, যাকে তাঁরা ‘ধানমাড়া দেওয়া’ বলতেন। এখন কৃষকরা ‘ধান মাড়াই’ করতে মাড়াই কল ব্যবহার করেন, গ্রামের লোকেরা এর নাম দিয়েছেন ‘বোমা’।
এমনকি এমন হারভেস্টার আছে যেটার দ্বারা ধান কাটা ও মাড়াই এক সঙ্গেই সম্পন্ন করা যায়। হাওরে হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটার প্রসঙ্গে, সম্পাদকীয়র সংক্ষিপ্ত পরিসরে, আপাতত এইটুকুই কেবল বলছি, হারভেস্টার প্রচলন কৃষিতে একটি মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। এটি আসন্ন বিপর্যয় কাটাতে স্বল্প সময়ে যেমন ফসল কাটার কাজটিকে সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে পারবেÑ সেটি হবে কৃষকের জন্যে খুব উপকারি, তেমনি যে-কেউ এমন ভাবতে পারেন যে, এর ভবিষ্যৎ প্রতিফল কৃষিতে পুঁজিবাদী বিকাশের পথটিকেও দ্রুততার সঙ্গে মসৃণ করে তোলে ক্ষুদ্র খামারভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থাকে উচ্ছেদ করে বৃহৎ খামারভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পথ সুগম করে তোলবে।