গত শনিবার (২ এপ্রিল ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘ছাতকে নাইন্দার হাওরের বোরো ফসল রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ এলাকায় কৃষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।’ গত বৃহস্পতিবার এ কর্মসূচি পালিত হয়। কৃষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্থানীয় মির্জারখালে ফসলরক্ষার নামে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি আটকে নাইন্দার হাওরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে।’
ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের সামগ্রিক কার্যক্রমে সংঘটিত অনিয়ম-দুর্নীতির বিশাল ফিরিস্তি সম্পাদকীয়র স্বল্প পরিসরে হাজির করার কোনও অবকাশ নেই। সংক্ষেপে কেবল বলতে চাই, হাওরাঞ্চলে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নে কোনও বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা কিংবা কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি বরং তার বিপরীতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর জন্যে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের দুরভিসন্ধিমূলক তৎপরতা চালানো হয়েছে এবং তাছাড়া ফসলরক্ষা বাঁধের ব্যাপারে প্রকৃতিগতভাবে সবচেয়ে অভিজ্ঞ যারা সেই কৃষকদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কোনও পরামর্শও করা হয়নি। প্রকারান্তরে এখন বৃষ্টির জল আটকে পাকার আগেই কাঁচাধান তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে।
বিদগ্ধ মহলের ধারণা, বিভিন্ন প্রশাসনিক নিয়ম-নীতির নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গিয়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণকে এক ধরনের স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর স্বার্থ উদ্ধারের হাতিয়ারে পর্যবসিত করা হয়েছে, সরকারের কৃষকবান্ধব এই পরিকল্পনাটি আর কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না, বরং এক ধরনের দুর্নীতিবাজদের পকেট ভারি করছে। তাঁরা মনে করেন, হাওরের ফসলরক্ষা ও প্রয়োজনীয় স্থানে বাঁধ নির্মাণের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব হাওরবাসীকেই দিয়ে দেওয়া হোক। অপাতত এর বেশি কীছু বলছি না।