একটি সংবাদ প্রতিবেদনের (দৈনিক সুনামকণ্ঠ \ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) শিরোনাম হলো, ‘১৮২৯ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার ২’। জগন্নাথপুর থানা পুলিশের তৎপরতায় তারা গ্রেফতার হয়েছেন। বলা হয়েছে ‘পুলিশ দল শেরপুর গ্রামের সাজু মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানকালে ১৮২৯ পিস ইয়াবাসহ সাজু মিয়ার স্ত্রী ববিতা বেগম ও আলী হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।’ এই সংবাদের বার্তা একটাই। দুর্নীতিগ্রস্ত আত্মসাৎপ্রবণ পুঁজিবাদ প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহবধূকেও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছে। গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি ২০২৩) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করার ফাঁকে বলেন, ‘এটা ঠিক যে এই সরকার শতভাগ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন।’ এটা সত্যিকার অর্থেই এক বিস্ময়কর উন্নয়ন এবং প্রশংসার দাবি রাখে, এজন্য দেশ শেখ হাসিনাকে মনে রাখবে চিরদিন। কিন্তু এটাও সত্য যে, এই বিস্ময়কর উন্নয়নের সঙ্গে ‘উন্নয়নের অনুষঙ্গ দুর্নীতি’কে প্রতিরোধ করা যায়নি। এই দুর্নীতির একটি বাণিজ্যিক উপাদান ইয়াবা পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামের রান্নাঘরের চুলোর পাড় পর্যন্ত। মেনন আরও বলেছেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করলেও ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে দেশের তরুণদের বড় অংশ তাদের হতাশা ঢাকতে মাদকের আশ্রয় নিচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হলেও কোনো কার্যকর ফলাফল দেখা যাচ্ছে না।’
মেননের এই বক্তব্যের পর করণীয় সম্পর্কে নতুন করে বলার কীছু থাকে না। কেবল বলতে হয়, তরুণদের বড় অংশ মাদকাসক্ত হলে তারা উৎপাদনে অক্ষম মানবে পর্যবসিত হবে এবং মাদক ব্যবসার রমরমা যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি তার বিপরীতে দেশের উন্নয়নের বারোটা বেজে গিয়ে অকার্যকর রাষ্ট্রব্যবস্থার উদ্ভব ঘটবে। সুতরাং উন্নয়নের অনুষঙ্গ মাদক ব্যবসাকে যে-করেই হোক নির্মূল করুন এবং তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করুন।