পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে সড়ক দুর্ঘটনার খবর। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটছে। অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, পাবলিক প্লেসের মোড়ে সাইনবোর্ডে লেখা থাকে, “একটি সড়ক দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না”, “সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি”। কিন্তু আমরা তা কেউ মানিও না, পালনও করি না। কারণ অর্থের লোভ এমনভাবে আকর্ষিত করেছে যে, আমরা জীবনের সুরক্ষার কথা অনায়াসে ভুলে যাই।
বিভিন্ন সংস্থার জরিপ ও ওয়াকিবহাল মহলের মতে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, সড়ক দুর্ঘটনার মূলে অদক্ষ গাড়ি চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, চালকের বেপরোয়া গতি ও অভারট্যাকিং প্রবণতাসহ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
“রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই অবাধে চলছে অটোটেম্পু” শিরোনামে গত ২৮ আগস্ট দৈনিক সুনামকণ্ঠ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে বলা হয়, রোড পারমিট, টেক্স ফিটনেস, রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্স ছাড়াই সুনামগঞ্জের আভ্যন্তরীণ সড়কে চলছে দুই হাজারেরও অধিক অটোটেম্পু। এতে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব বঞ্চিতের পাশাপাশি সড়কে ঘনঘন দুর্ঘটনাও ঘটছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও বাড়ছে। এসব পরিবহনের চালক ও যানবাহনের বৈধ কাজগপত্র না থাকায় দুর্ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সংবাদে সুনামগঞ্জ বিআরটিএ অফিসের বরাত দিয়ে বলা হয়, অটোটেম্পু, হিউম্যান হলার ও অটোরিকশার সরকারি রোড পারমিট ১৪ কি.মি.। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কসহ আভ্যন্তরীণ সড়কে রোড পারমিট ছাড়াই যাতায়াত করছে হাজারো যানবাহন এবং লাইসেন্স নেই ১০ভাগ চালকেরও।
প্রশ্ন হলো, যারা অবৈধভাবে যানবাহন চলাচলের সুযোগকে প্রসারিত করে দিচ্ছেন এবং যারা অধিক মুনাফার লোভে অদক্ষ চালকের হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরিয়ে দিচ্ছেন, তারা কী সড়ক দুর্ঘটনার বাইরে? সৃষ্ট সড়ক দুর্ঘটনার মুখে যে কেউ পড়তে পারেন।
আমরা চাই, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সড়কে চলাচলকারী অবৈধ যানবাহন ও অদক্ষ চালকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নিবেন। নিজে সুরক্ষিত থাকবেন এবং অন্যকেও সুরক্ষা দিতে এগিয়ে আসবেন।