স্টাফ রিপোর্টার ::
গ্রাম্য প্রভাবশালীদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে দিরাই উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের বাউশী গ্রামের একটি সংখ্যালঘু পরিবার। এই পরিবারকে একঘরে করে রাখতে তারা নানা ‘নিয়ম’ বেধে দিয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানাযায়, জোরপূর্বক জায়গা-সম্পত্তি দখল ও সাঁকো নির্মাণে বাঁধা দেয়ায় গত ২৯ মে বাউশী গ্রামের ওই সংখ্যালঘু বৈষ্ণব পরিবারের সদস্যদের উপর একই গ্রামের প্রভাবশালীরা হামলা চালায়। এ সময় ভুক্তভোগী দীপক বৈষ্ণব ও তার স্ত্রীর উপরও চড়াও হয় স্থানীয় পঞ্চায়েতের লোকেরা। এক পর্যায়ে তারা দীপক বৈষ্ণবকে মারধর করে এবং তার স্ত্রীকেও শ্লীলতাহানি করে। এই ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী বৈষ্ণব পরিবারের সদস্যদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতব্বররা। এছাড়া প্রতিবেশীর সাথে চলাফেরা ও কথাবার্তা বললে ৫ হাজার টাকা জরিমানার ‘আইন’ করে দিয়েছে।
তবে, এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাউশী গ্রামের কিছু সচেতন মানুষ। তারা মঙ্গলবার দুপুরে দিরাই পৌরসভার অতিরিক্ত পুলিশ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন। এ সময় বৈষ্ণব পরিবারের ওপর হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি হামলাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির শাল্লা উপজেলার সভাপতি এইচ এম দুলদুল চৌধুরী, নিরেশ চন্দ্র বৈষ্ণব, নারীনেত্রী রেণুকা বেগম, হেলেনা বেগম খেলা, মালতি দাস, ময়না রাণী বৈষ্ণব, দীপ্ত বৈষ্ণব, সত্যজিৎ বৈষ্ণব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, হামলায় আহত নারী অন্যত্র কাজ করে তিনটি ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। একটি ছেলে শাহজালাল ভার্সিটি, আরেকটি এমসি কলেজ ও অন্যজন টেকনিক্যাল কলেজে অধ্যয়নরত থাকলেও মিথ্যা একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি ও বাড়িছাড়া করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হলেও জড়িতরা জামিনে বের হয়ে মামলা প্রত্যাহার করতে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এই ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
এ ব্যাপারে দিরাই থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, আদালতে উভয়পক্ষের মামলা রয়েছে। আসামিরা জামিনে রয়েছে। তদন্ত চলমান। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জসিট দাখিল করা হবে।