সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হতে পারে। এ নিয়ে আগামী দুই-একদিনের মধ্যে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ২য় ধাপের ফল প্রকাশের কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি সপ্তাহে ফল প্রকাশ করা হতে পারে। ২য় ধাপের ফল প্রকাশের পর দ্রুত তৃতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, আমরা দ্রুত প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেষ করতে চাই। সেই লক্ষ্যমাত্রা দিয়েই সবাই নিরলসভাবে কাজ করছে। তিন ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষা শুরু করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের এক কর্মকর্তা বলেন, দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রস্তুতের কাজ করছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। ফল তৈরি হয়ে গেলে বুয়েট কর্তৃপক্ষই সেটি আপলোড করে। এরপর সে ফলাফল প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
মৌখিক পরীক্ষায় প্রার্থীদের হাতের লেখা পরীক্ষা করা হবে। লিখিত পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখার সঙ্গে মৌখিক পরীক্ষায় লেখার মিল না পেলে বাতিল করা হবে প্রার্থীতা। গত বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ ২০২০-এর লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সময় প্রার্থীদের ওএমআর শিটে ইংরেজি ও বাংলায় দুটি অনুচ্ছেদ লিখতে হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষার সময় তাদের হাতের লেখা যাচাই করা হবে। যাচাই করার সময় টেক্সটবক্সে ইংরেজি ও বাংলায় লেখা হাতের লেখার সাথে মিল পাওয়া না গেলে প্রার্থীতা বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, দ্বিতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষার ফল তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত তা প্রকাশ করা হবে। মহাপরিচালক বলেন, মৌখিক পরীক্ষার কাজ দ্রুত শেষ করতে আলাদা একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অটোমেটিক প্রার্থীদের একাডেমিকসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হবে। এর ফলে শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে আর সনদ যাচাই এর প্রয়োজন হবে না।
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সহকারী শিক্ষক পদে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে তিন পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১ জেলা থেকে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী। সে হিসাবে ১টি পদের বিপরীতে প্রতিযোগিতা করতে হবে ২৯ প্রার্থীকে। তিন ধাপে আয়োজন করা হচ্ছে নিয়োগ পরীক্ষার।
প্রথম ধাপে দেশের ২২টি জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২২ এপ্রিল। যার ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ১২ মে। পরীক্ষার ২০ দিনের মাথায় প্রকাশিত ফলাফলে ৪০ হাজার ৮৬২ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এরপর গত ২০ মে ২৯টি জেলায় লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোট ৪ লাখ ৬৬ হাজার ১০০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। সর্বশেষ গত ৩ জুন ৩২ জেলায় লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯৮ জন পরীক্ষার্থী।