স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে অকাল বন্যায় বোরো ফসল হারানো কৃষকরা সরকারি সহায়তা চান। হঠাৎ পাহাড়ি ঢল তলিয়ে এসে পাকা বোরো ফসল তলিয়ে নষ্ট করে দিয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে বাদাম, সবজি ও আউশধানও। এই অবস্থায় চোখে অন্ধকার দেখছেন বন্যায় ফসল হারানো কৃষকরা।
গত ১৪ মে থেকে সুনামগঞ্জে হঠাৎ পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণ শুরু হয়। ১৭ মে থেকে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর ৩-৪ দিনে প্লাবিত হয় জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা। এসব এলাকার বোরো মওসুমে আবাদকৃত হাওরের বাইরের বোরো ধান বন্যা কবলিত হয়। চোখের সামনে পানিতে ডুবে যায় পাকা বোরো ধান। গত দশদিন ধরে সেই ধান পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এখন পচন ধরেছে। অনেকে ফসলের মায়ায় সেই পচা ধান সংগ্রহের চেষ্টা করছেন। সরকারি হিসেবে ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও বেসরকারি হিসেবে ৫ হাজার হেক্টরের অধিক বোরো ধান তলিয়ে গেছে। অনেক কৃষক আবাদকৃত জমির একমুঠো ধানও কাটতে পারেননি। চোখের সামনে নিমিষেই তাদের বোরো জমি তলিয়ে গিয়ে নিঃস্ব করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বছরের খোরাকি নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। তাই ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে তারা সরকারি সহায়তা দাবি করেছেন।
কৃষি বিভাগের মতে ধান ছাড়াও আউশ বীজতলা ১৩০ হেক্টর, আউশধান ৩০ হেক্টর, সবজি ৭০ হেক্টর এবং বাদাম ৯৫ হেক্টর তলিয়ে যায়। পাকা ধান তলিয়ে যাওয়ায় বছরের খোরাকি নিয়ে অস্থিরতায় আছেন ফসলহারা কৃষকরা।
লালপুর গ্রামের কৃষক লিলু মিয়া বলেন, আমার প্রায় ৫ কিয়ার জমিন গেছেগো। কাটতাম পারতাছিনা। এখন কাইট্যা আন্তাছি। কোন খাম অইতোনা। খুইদকুড়ো খাইয়া বাচতে অনব। ২০-২৫ হাজার লস গেছে।
সাক্তারপাড়া গ্রামের কৃষক সফর আলী বলেন, আমার দশ কিয়ার ধান বাদাম একদিনের পাইন্যে তলাইয়া নিছেগা। আমরার খরচার হাউরের উজান অঞ্চলের বেশি বেশি ধান যে জায়গায় অইতোম সব নষ্ট কইরা গেছে বইন্যায়। এখন কি খাইয়া বাচুম। সরকার আমরারে বাচার উপায় কইরা দেউক।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে জেলার কয়েকটি উপজেলার প্রায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমির পাকা বোরো ধান তলিয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়েছি। তাদেরকে কৃষি মওসুমে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হবে।