স্টাফ রিপোর্টার ::
আগাম বন্যার হাত থেকে হাওর এলাকার একমাত্র বোরো ফসল রক্ষার জন্য ফসলরক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে কজওয়ে নির্মাণ করা হবে। এছাড়া জেলার গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি নদী খনন করা হবে। দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে হাওরে আগাম বন্যার ঝুঁকি অনেক কমে যাবে।
জেলার বিভিন্ন হাওরে নির্মাণাধীন ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শন শেষে বৃহ¯পতিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত হাওর রক্ষা বাঁধ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী টাকার কথা চিন্তা করেন না। তিনি চান হাওরের মানুষের উন্নয়ন, ফসলের সুরক্ষা। হাওরে বাঁধে কজওয়ে নির্মাণের জন্য ৪৯৪ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে পাসের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। শীঘ্রই তা একনেকে পাস করা হবে।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, আমরা ভাটির দেশের লোক। বর্ষায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢলে সাথে পলি এসে নদী ভরাট হয়ে যায়। আমরা ১৪টি নদী খননের প্রকল্প গ্রহণ করছি। এর সাথে সংযুক্ত খাল উদ্ধার করা হবে। প্রকল্প চলমান আছে। স্টাডি করা হচ্ছে। আগামী শুষ্ক মৌসুমে কাজ করা হবে। নদী ড্রেজিংয়ের মাটি দিয়ে বাঁধ তৈরি করবো। এই মাটি দিয়ে হাওরের পাড়ে ধান শুকানো ও কৃষক থাকার জন্য উঁচু স্থান তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলের উন্নয়নে অনেকগুলো প্রকল্প গ্রহণ করছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে চার পাঁচ বছর পর আগাম বন্যা নিয়ে চিন্তিত হতে হবে না। আমাদের উপর আস্থা রাখেন। হাওরের টাকা দিয়ে কোনো টাকা উপার্জন করিনি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপর আস্থা রাখুন, সহযোগিতা করুন। আশা করছি এবার বাঁধের কাজ আরও ভালো হবে। ফসল সুরক্ষিত হবে। কৃষকরা সুন্দরভাবেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংসদ সদস্য শামীমা শাহরিয়ার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশীদ, সিলেট বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এস এম শহীদুল ইসলাম, পৌর মেয়র নাদের বখত প্রমুখ। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, পরিবেশকর্মী কাশমির রেজা, টিটু পুরকায়স্থ, সাংবাদিক শহীদনূর আহমেদ।
মতবিনিময় সভার শুরুতেই ফসলরক্ষা বাঁধের চলমান কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, কাবিটা নীতিমালা ১৭ অনুযায়ী চলতি বোরো মৌসুমের ফসলের সুরক্ষার জন্য সুনামগঞ্জে এবার ৭২৪টি পিআইসির মাধ্যমে ১১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৭২% দেখানো হয়েছে। বিলম্বে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় বাঁধের কাজ আরও ১০ দিন সময় বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।