1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জগন্নাথপুরে বন্ধের পথে বাঁধের কাজ

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুরে টাকার অভাবে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুধু প্রথম বিলের টাকা দিয়ে বাঁধের পুরো কাজ করাতে গিয়ে পিআইসিরা বেকায়দায় পড়ে গেছেন। বাঁধের কাজ করাতে গিয়ে পিআইসিদের মধ্যে অনেকে মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা ও চড়া সুদে টাকা এনেছেন। তাদের আশা ছিল, দ্বিতীয় বিলের টাকা পেলে পরিশোধ করবেন। তা আর হচ্ছে না। প্রথম বিল ২৫ ভাগ পেলেও দ্বিতীয় বিল ১৫ ভাগ পাওয়ার কথা শোনে পিআইসিদের মধ্যে ক্ষোভ ও অনীহা বিরাজ করছে। এর মধ্যে অনেকের কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় পিআইসিরা আরও বিপাকে পড়েছেন। এবার এস্কেভেটর মেশিন, ডিজেল ও শ্রমিকদের পুরো টাকা দিতে হবে। তবে পর্যাপ্ত টাকা না পাওয়ায় পাওনাদারদের টাকা দিতে পারছেন না। যে কারণে অনেক পিআইসি কমিটির সদস্যরা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে নলুয়ার হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের ভুরাখালি এলাকায় পিআইসিরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় ৪নং পিআইসি কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য আহমদ আলী বলেন, আমার প্রকল্পে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম বিলে ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেয়া হলেও পুরো কাজ শেষ করার চাপ দেয়া হয়। কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে ধারদেনা করে পুরো কাজ শেষ করেছি। আমার কাজ দেখে পরিদর্শনে আসা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বিলও পাইনি। তৃতীয় ও চতুর্থ বিলের কথা তো চিন্তাও করা যায় না। তবে শুনেছি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে দ্বিতীয় বিল হিসেবে আরও ১৫ ভাগ টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এ টাকা দিয়ে কারো ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়। তাই ২৫ ভাগ না দিলে আমি টাকা নেবো না।
৩নং পিআইসি কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য রণধীর কান্তি দাস রান্টু বলেন, আমার প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। এর মধ্যে কাজের শুরুতে প্রথম বিল হিসেবে ২৫ ভাগ ৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিল পাইনি। আমার প্রকল্পের মাটি কাটার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কাজ শেষ করতে গিয়ে অনেকে ধারদেনা করতে হয়েছে। এখন পাওনাদারদের চাপে দিশেহারা হয়ে গেছি। তবে শুনেছি, দ্বিতীয় বিল হিসেবে আরো ১৫ ভাগ টাকা দেয়া হবে। এ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবো না। তাই দ্বিতীয় বিল হিসেবে ২৫ ভাগ দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
৫নং পিআইসি কমিটির সভাপতি জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার প্রকল্পের মাটি কাটার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এ কাজ শেষ করতে গিয়ে অনেকের কাছ থেকে ধারদেনা ও চড়া সুদে টাকা এনেছি। ভেবেছিলাম দ্বিতীয় বিল পেলে দেবো। এর মধ্যে কাজ শেষ হওয়ায় এস্কেভেটর মেশিন, ডিজেল ও শ্রমিকরা টাকার জন্য দিশেহারা করে দিচ্ছে। টাকা না পাওয়ায় তাদেরকেও দিতে পারছি না। সরকারি বেধে দেয়া সময় প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্য বছর এ সময়ে তৃতীয় বিল দেয়া হয়। এবার দ্বিতীয় বিলও পাইনি। শুনেছি, দ্বিতীয় বিলের ১৫ ভাগ টাকা দেয়া হবে। এ টাকা দিয়ে মান বাঁচানো যাবে না। তাই ২৫ ভাগ বিল চাই।
এ সময় পিআইসি সদস্য সহ স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে বলেন, অধিকাংশ প্রকল্পের ৮০ থেকে ৯৫ ভাগ মাটি কাটার কাজ শেষ হয়েছে। ড্রেসিংসহ অন্য কাজ তো বাকি রয়ে গেছে। বর্তমানে টাকার অভাবে অনেক প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ঋণে জর্জরিত হয়ে অনেক পিআইসি সদস্যরা দেউলিয়া হয়ে গেছেন। তাই দ্রুত দ্বিতীয় বিল হিসেবে আরো ২৫ ভাগ টাকা দিতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, আপাতত সরকারিভাবে দ্বিতীয় বিলের ১৫ ভাগ টাকা এসেছে। তা নিয়ে পিআইসিদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে। বিল বাড়ানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আগামীতে টাকা আসলে আরও দেয়া হবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com