1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৫:৩৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বহুমুখী তৎপরতায় বিএনপি

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
একাদশ জাতীয় নির্বাচনে একাধিক ‘প্রতিকূল’ সিদ্ধান্তের কারণে খেসারত দিতে হয়েছে বিএনপিকে। সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া, বিতর্কিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটে অংশ নেওয়া না নেওয়া, সংলাপে বসা কিংবা না বসা- এমন নানা দ্বিচারী সিদ্ধান্তে ‘হ-য-ব-র-ল’ ফল আসে।
দলের এমন অনাকাক্সিক্ষত ফলে উষ্মা ও হতাশা বেড়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। বহুবার তা প্রকাশ্যে এসেছে। এবার যে তারা পুরনো পথে হাঁটবে না; তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এখন থেকে। মুখের বক্তব্য কাগজেও মিলছে। নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্ব না দিয়ে তা গঠনে সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি। জোটের অন্য শরিকদেরও বিরত রাখতে পেরেছে। এমনকি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বঙ্গভবনের সংলাপ বর্জন করা দলটি বলছে, নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়াকে সময়ের বাতুলতা। তাই নির্বাচন কমিশনে মনোযোগ না দিয়ে নিজের পরিকল্পনা মাঠে বাস্তবায়নে সময় দিতে চায় বিএনপি। তবে নামের প্রস্তাব না দিলেও নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের সরকারের কার্যক্রমে নজর রাখছে। তারা কাগজে-কলমে কমিশনকে এড়িয়ে গেলেও ‘গঠনমূলক সমালোচনায়’ মুখর থাকবেন। কমিশনের বিষয়ে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করে জনগণের কাছে প্রমাণ করার চেষ্টা করবেন নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভোট উপহার দিতে পারবে না। এ জন্য তারা দলনিরপেক্ষ সরকারের বিষয়টি সামনে আনতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের গুরুত্ব তুলে ধরবে দেশে ও দেশের বাইরে।
বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সমানে রেখে সবকিছুই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশ ও বিদেশে বহুমুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। করোনার বিধিনিষেধে মাঠের কর্মসূচি বন্ধ থাকার ফাঁকে সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার কাজ প্রায় শেষ করেছে দলটি। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ইতোমধ্যে আলাদাভাবে কথা বলছেন সরকারবিরোধীদের সঙ্গে। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে বিতর্কিত কিছু বিষয়ের সমাধান টানার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে মধ্যপন্থার একটি সিদ্ধান্তে আসতে চায় বিএনপি। কেননা জামায়াতের কারণে অনেক রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে আসতে আগ্রহী নয়। ভোটের রাজনীতি মাথায় রেখেই জামায়াত নিয়ে নয়া হিসাব কষছে বিএনপি। পরে যাতে এ নিয়ে কেউ বেঁকে বসতে না পারে। সে সঙ্গে নানা কারণে বেজায় মন খারাপে থাকা বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও দূরত্ব কমিয়ে আনছে। যাতে ঐক্য হওয়ার পর কেউ কানাঘুষা করতে না পারে। বিএনপি সত্যিকার অর্থে দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চায়Ñ এমন বাক্যে এক ছায়ায় আনতে চায় সবাইকে।
সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই তারা বৃহত্তর ঐক্যের জন্য কাজ করছেন বলে জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ঐক্যের কাজ চলছে। আমরা আলোচনা করছি। সময় হলে তা ঘটা করে জানানো হবে। বৃহত্তর ঐক্যের মতো কঠিন কাজ করতে গেলে চ্যালেঞ্জও তো থাকবে। আমরা সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই এগোচ্ছি। আশা করি ঐক্য হতে সমস্যা হবে না। কারণ এ সরকারকে সরাতে সবাই একমত। আমরা সবাইকে নিয়েই এগোতে চাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের দাবি অব্যাহত আছে। নতুন ইসি গঠন নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যথা নেই। কারণ নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় হলে জনগণের অধিকার আদায় হবে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব। বিএনপি আগামীতে নির্দলীয় সরকার ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ করতেও প্রস্তুত আছে। তবে সংলাপের এজেন্ডা আগেই নির্ধারিত থাকতে হবে। নির্বাচনের বাইরে কোনো বিষয়ে আলাপে সময় ফুরাবে না তারা।
সংলাপ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই যে আপনারা সংলাপের কথা বলছেন। সংলাপও তো তাদের সঙ্গে আমরা করেছি। একাধিকবার সরকারের সঙ্গে সংলাপ করেছি। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সংলাপ করেছি। কিন্তু সরকার সেখানেও চরম বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের তিন মাস পর নতুন নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে তারা প্রতারণা করেছে। তারা বলেছিল সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় এ নির্বাচন। কিন্তু পরে তা ডিনাই করেছে।
অন্যদিকে পুরোদমে চলছে বিএনপির দল গোছানোর কাজ। লক্ষ্য আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আন্দোলন। করোনার বিধিনিষেধ উঠে গেলে বিএনপি তাদের আন্দোলন কর্মসূচি ফের চাঙ্গা করতে চায়। সারা দেশে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা, নির্দলীয় সরকারসহ নানা ইস্যুতে মাঠে নামতে চায়। তৃণমূলকে উজ্জীবিত করতে চায়। এরই মধ্যে দলের সাংগঠনিক ভিতকেও মজবুত করছে এক যুগের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সাংগঠনিক সব কমিটি ঢেলে সাজানোর কথা থাকলেও তা আর সম্ভব হয়নি। তবে আগামী জুনের মধ্যে তৃণমূল সম্মেলন শেষ করতে চায় দলটি। এরই মধ্যে অর্ধশতাধিক উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে। করোনা বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হলে মার্চে জেলা সম্মেলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতারা।
দফতর সূত্রে জানা গেছে, ৮১টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৪৪টিতে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। ১২ জেলায় আংশিক আহ্বায়ক কমিটি আছে। চলতি মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি জেলার সম্মেলন তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
অন্যদিকে বিএনপি কূটনৈতিক নীতির পরিবর্তন এনে তৎপরতা আরও জোরালো করছে। নির্বাচনের আগে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দলের বৈদেশিক কমিটি হোম ওয়ার্ক করছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com