বিশেষ প্রতিনিধি ::
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি (এমএসআর) কেনার দরপত্র (টেন্ডার) ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এহসান আহমদ উজ্জ্বলসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে, টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনায় এহসান আহমদ উজ্জ্বলসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে দ্রুতবিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনায় টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করে দিয়েছে। এছাড়া ছিনতাইয়ে যুবলীগ নেতার নাম আসায় তাকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে চিঠি লিখেছে জেলা যুবলীগ।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি কেনা সংক্রান্ত দরপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও পুলিশ লাইনস হাসপাতালে তা জমা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত বক্স রাখা ছিল। বুধবার সকালে দুটি পক্ষ আলাদাভাবে দরপত্র জমা দিতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে যায়। এসময় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এহসান আহমদ উজ্জ্বলসহ ৫ জন দরপত্র জমা দিতে যাওয়া দুটি পক্ষের কাছ থেকে সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে দরপত্র ছিনতাই করে নিয়ে আসে। ছিনতাইয়ের ঘটনা তখন সদর হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাথে সাথে সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দরপত্র ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করে অভিযানে নামে। পরে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে এহসান আহমদ উজ্জ্বল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়ান তাজুল, রিগ্যান আহমদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মাইজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা হামিদুর রহমান শিপন এবং ঢাকার মিরপুর-১০ বাসিন্দা মাজেদ বিশ্বাসের ছেলে শাওন মাহমুদকে আটক করে পুলিশ।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ওষুধ, সরঞ্জাম ও খাবার সরবরাহের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। বুধবার দরপত্র জমাদান করতে আসে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সকালে এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা জানার পর আমরা পুলিশকে খবর দেই। পুলিশ আমার অফিসে এসে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে। পরে তাদেরকে বিভিন্ন স্থান থেকে আটক করা হয় বলে জেনেছি। তিনি বলেন, টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা তা বাতিল করে দিয়েছি। যারা ক্ষতির শিকার হয়েছে তারা হয়তো এ ঘটনায় আইনি সহায়তা নিবে।
সদর থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, টেন্ডার ছিনতাইয়ের ঘটনায় এহসান আহমদ উজ্জ্বলসহ আমরা ৫ জনকে গ্রেফতার করেছি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জয়নাল আবেদীন জানান, হাসপাতালের দরপত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫জনের বিরুদ্ধে দ্রুতবিচার আইনে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঈগল এন্টারপ্রাইজের মার্কেটিং অফিসার পাভেল বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল বলেন, কেউ যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে অন্যায় কোন কাজ করলে যুবলীগ তার দায় নেবে না। আমরা অভিযুক্ত ওই নেতাকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে চিঠি লিখেছি।