1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ১২:১৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিলের মাছ ধরতে কেটে ফেলা হলো ফসলরক্ষা বাঁধ

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশায় জামখালা হাওরে নীতিমালা অমান্য করে বিল শুকিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এজন্য কেটে ফেলা হয়েছে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ। হাওরের বাঁচাডুবি বিলের বাঁধটি কেটে দেওয়ায় এখন পুরো জামখলা হাওরটিই অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে কয়েক শত হেক্টর বোরো ফসল।
হাওরের কৃষকরা জানিয়েছেন, সরকার প্রতি বছর হাওরের ফসল রক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু একটি প্রভাবশালী চক্র হাওরের বিল ইজারা এনে বিল শুকিয়ে মৎস্য নিধনের জন্য ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে দেয়। বাঁধটি কেটে ফেলায় ফসল হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার দুপুরে জামখালা হাওরের বাঁচাডুবি বিলে গিয়ে দেখা যায়, সেচের কারণে বিলের পানি শুকিয়ে তলদেশে চলে গেছে। বিলের অনেক অংশে ইজারাদারের লোকজন মাছ ধরে খলায় নিয়ে আসছেন।
ধরমপুর সলফ গ্রামের মধ্যখানে গিয়ে দেখা যায়, এই জলাশয়ের পানি একটি সড়ক কেটে বের করা হচ্ছে। সড়কটি ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন র্বোড। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে এই খালটি একেবারেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর থেকেই বাঁধটি ধরমপুর সলফ গ্রামর লোকজন সড়ক হিসেবেই ব্যবহার করে আসছেন। কিন্তু ইজারাদাররা খালের বাঁধটি এ বছর কেটে দিয়ে বিল শুকিয়ে মৎস্য আহরণ করছেন।
উপজেলা সমবায় অফিস সূত্রে জানা যায়, জামখালা হাওরের বাঁচাডুবি জলমহালটি ১৪২৬ বাংলা হতে ১৪৩১ বাংলা সনে ৬ বছর মেয়াদে দরগাপাশা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটি সংগঠনটি ইজারা নিয়েছে। সমিতির নিবন্ধন নং-১৩৯৯। সমিতির সভাপতি দরগাপাশা গ্রামের মো. ছানু মিয়া ও সাধারণ স¤পাদক মো. সাহিদ মিয়া। অন্তবর্তীকালীন ৩ সদস্যবিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. সমসর উল্লা, সদস্য মো. আজির উদ্দিন ও মো. হুরমত উল্লা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধরমপুর, সলফ গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, এই বিলটি সাবলিজে এনেছেন লাউগাং (উমেদনগর) গ্রামের জানার মিয়া, সাবেক মেম্বার হারুন মিয়া, সলফ গ্রামের ইমরাজুল খান, শাহান মিয়া, কুতুব উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। তারা প্রভাবখাটিয়ে আমাদের ব্যবহারের এ সড়কটি কেটে দিয়েছে। এখন গ্রামের লোকজন চলাচল করতে পারছেন না। সেই সাথে হাওরের ফসল হানির আশঙ্কা রয়েছে।
তারা আরো জানিয়েছেন, এই বিলটির ইজারাদার দরগাপাশা মৎম্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ছানু মিয়া ও সাধারণ স¤পাদক মো. সাহিদ মিয়া থাকলেও মূলত সমিতি চালান দরগাপাশা গ্রামের তৌহিদ খুরশিদুজ্জামান চৌধুরী নাজমুল।
তৌহিদ খুরশিদুজ্জামান চৌধুরী নাজমুল জানান, এই বিলটি আমার চাচাতো ভাইরা ইজারা এনেছেন, আমি তাদেরকে বিলে মাছ চাষ করতে টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করেছি। সমিতি গঠন থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত আমার অবদানেই এই সমিতি চলমান আছে। তিনি বলেন, বিলের পানি শুকিয়ে মাছ আহরণের জন্য বাঁধটি কেটে দিয়েছি। এই খাল দিয়েই আমাদের বিলের পানি শুকাতে হয়। তবে আমি কারো অনুমোতি নেইনি। সাবলিজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, এতো বড় বিল একা তো ফিসিং করা যায় না, তাই এলাকার কিছু মানুষকে ভাগিদার বানিয়েছি। এখন মূলত তারাই ফিসিং করছেন।
বিলের ইজারাদার দরগাপাশা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি ছানু মিয়া জানান, বিলটি ইজারা এনে আরও কয়েকজনকে দিয়ে মাছ চাষ করাচ্ছি। বাঁধ কেটে না দিলে আমাদের বিলের মাছ ধরা যাবে না, তাই বাঁধ কেটে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, বিল শুকিয়ে মাছ আহরণের কোন সুযোগ নাই। আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি। উনার পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, এই বাঁধটি ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে স¤পূর্ণ রূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল যাতে করে এই এলাকার মানুষের হাওরের ফসল আগাম বন্যা থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু একটি অসাধু চক্র তাদের জলমহাল ফিসিং করার জন্য বাঁধটি কেটে দিয়েছে। এই ব্যাপারে উপজেলা কমিটি পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার উজ জামান জানান, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে বলেছি বিলের ইজারাদারকে ডেকে এনে তাদের সাথে কথা বলার জন্য। এই বাঁধটি বিলের ইজারাদাররা বেঁধে দিতে হবে। তবে কোন কারণে তারা বাঁধটি মেরামত না করলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে মেরামত করা হবে।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com