শহীদনূর আহমেদ ::
দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের মহাসিং নদীর তীরবর্তী স্লুইস গেইটটি। স্লুইস গেইটের লোহার পাইপ ভেঙে শূন্যে রয়েছে পাটাতন। নদীতে পানির উচ্চতা বাড়লেই ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইস গেইট দিয়ে পানি প্রবেশে আশঙ্কা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্লুইস গেইটটি মেরামত না হওয়ায় অরক্ষিত রয়েছে উপজেলার পাখিমারা, পিঁপড়া কান্দি, বড় হাওর, নাগডরা, খইয়াখালী সাংহাই হাওরসহ অনন্ত ৭টি হাওরের বোরো ফসল।
অপরদিকে, স্থানীয় কৃষকদের পক্ষ থেকে একাধিকবার উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসের সাথে যোগাযোগ করা হলে স্লুইস গেইট মেরামতে আশ্বাস ব্যতিত কিছুই মেলেনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে বারবার প্রস্তাবনা পাঠালেও কোনো প্রকার বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে উপজেলা পাউবো অফিস।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসিং নদী তীরবর্তী স্লুইস গেইটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গেইটের উপরের পাটাতন ভাঙা। তিনটি ঢাকনার মধ্যে দুটিই ভাঙ্গা। একটি ঢাকনার লোহার পাইপ ভেঙে বেঁকে আছে। তিন ঢাকনার দুটিই শূন্যে রয়েছে। ঢাকনা শূন্যে থাকায় নদীর পানির বৃদ্ধি পেলে স্লুইস গেইটের বিশাল ফাঁক দিয়ে যেকোনো সময় পানি প্রবেশের শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। নদীতে পানি বৃদ্ধির আগে স্লুইস গেইট মেরামত করে ক্লোজার বন্ধ না করলে উপজেলার অন্তত ৭ হাওরে ফসলহানির ঘটনা ঘটতে পারে জানান কৃষকরা। তাই দ্রুত স্লুইস গেইটটি সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকরা।
কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফসলের সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণ করে দিচ্ছে। এখন স্লুইস গেইটের কারণে আমাদের ফসল ডুবে যাবে। গত বছর বস্তা দিয়ে ভাঙা বন্ধ করা হয়েছিল। শুনছিলাম এবার কাজ হবে। কই এবারতো স্লুইস গেইট মেরামত করা হচ্ছে না।
কৃষক রুশান মিয়া বলেন, অনেক বার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বলেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। কাজের কাজ হয়নি। স্লুইস গেইটের কারণে ফসলহানি হলে এর দায় কে নিবে?
পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূর কালাম বলেন, স্লুইস গেইটের সংস্কারের ব্যাপারে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেছি। এবারও বরাদ্দ আসেনি। তবে নদীতে পানি আসলে বস্তা দিয়ে ভাঙা বন্ধের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মাহমুবুল আলম বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় দুইটি ক্ষতিগ্রস্ত স্লুইস গেইট রয়েছে। এগুলো মেরামতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এখনো কোনো প্রকার বরাদ্দ পাইনি। পূর্বের ন্যায় বস্তা দিয়ে ভাঙ্গা বন্ধ করা হবে বলে জানান তিনি।