হোসাইন আহমদ ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের এক বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি চিকিৎসা সেবা। ফলে উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি থেকে। উল্লেখ্য, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপির আন্তরিক প্রচেষ্টায় এক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শান্তিগঞ্জে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ৪তলা ভবনের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাযায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলাটি ২০০৬ সালের ২৭ জুলাই আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়। উপজেলা প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১ যুগের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ হয়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ। অবশেষ বর্তমান সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী আলহাজ্ব এমএ মান্নান এমপি’র আন্তরিক প্রচেষ্টায় এক বছর আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৪তলা ভবনের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। নির্মাণের পরপরই ২০২১ সালের ২৪ মে থেকে সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের নির্ধারিত ক্যাম্পাস নির্মাণ না হওয়ায় নবনির্মিত শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনকে তাদের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসাবে কার্যক্রম শুরু করে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে প্রয়োজনীয় লোকবল, অপারেশন থিয়েটারসহ যন্ত্রপাতি থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু হচ্ছে না। এতে করে শান্তিগঞ্জ উপজেলা উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ চিকিৎসা বঞ্চিত থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হঠাৎ কোন লোক অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য রোগীকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সুনামগঞ্জ সদর বা শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। যার ফলে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই অনেক রোগী রাস্তায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক ও আস্তমা গ্রামের বাসিন্দা সোহেল তালুকদার বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি উপজেলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস চালু রয়েছে। এতে আমরা উপজেলাবাসী স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছি। সাধারণ রোগীদের জন্য এ উপজেলায় সরকারি কোনো হাসপাতাল না থাকায় সুনামগঞ্জ বা সিলেট গিয়ে চিকিৎসার যে ব্যয় তা দিতে না পারায় বাধ্য হয়েই গ্রামের কবিরাজ ও হাতুড়ে ডাক্তাদের দ্বারস্থ হয়ে অপচিকিৎসার দিকে ধাবিত হচ্ছেন। গর্ভবতী মায়েরা সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। অনেক দূরের হাসপাতালে সময় মতো নিতে না পারায় গর্ভবতী অনেকেই মারা যায়। অচিরেই শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. জসিম উদ্দিন শরীফি বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নবনির্মিত ভবনগুলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লিখিত নির্দেশনা মোতাবেক সুনামগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন মহোদয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ সুনামগঞ্জের অস্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে ব্যবহারের জন্য অধ্যক্ষ মহোদয় বরাবর হস্তান্তর করা হয়েছে। জনসাধারণের চিকিৎসা সেবার বিষয়টি বিবেচনা করে মেডিকেল কলেজের পাশাপাশি সীমিত পরিসরে হলেও সেবা কার্যক্রম চালুর প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পত্র দেয়া হয়েছে। সেবা চালুর প্রশাসনিক অনুমতি, প্রয়োজনীয় জনবল ও আনুষঙ্গিক বরাদ্দ পেলে দ্রুত সময়ে সেবা কার্যক্রম শুরু করা যাবে।